আজ টিকে থাকার লড়াইয়ে মাঠে নামবে নাইজেরিয়া আর আর্জেন্টিনা। হারলেই বাদ, এ সমীকরণ নিয়েই মাঠে নামবে দু’দল। বিশ্বকাপে নাইজেরিয়া-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ নতুন কিছু নয়। সেই ১৯৯৪ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু, এখন পর্যন্ত মোট চারবার আফ্রিকার দেশটিকে মোকাবেলা করেছে আলবিসেলেস্তেরা। এক নজরে দেখে নেই সেই ম্যাচগুলো...
Advertisement
১৯৯৪, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ
আর্জেন্টিনা ২-১ নাইজেরিয়ানৈপুণ্য, শৈল্পিক আর পাওয়ার ফুটবলের মিশেলে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসেই বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিল নাইজেরিয়া। উদ্বোধনী ম্যাচে বুলগেরিয়াকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে বড় দলগুলোর মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল আফ্রিকান সুপার ঈগলেরা।
এদিকে আর্জেন্টিনাও প্রথম ম্যাচে গ্রীসকে ৪-০ ব্যবধানের গোল বন্যায় ভাসায়। বারুদঠাসা গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বোস্টনে মুখোমুখি হয় নাইজেরিয়া আর আর্জেন্টিনা। সেবার অবশ্য এক ক্লদিও ক্যানিজিয়ার কাছেই হার মানতে হয় নাইজেরিয়াকে।
Advertisement
প্রথমার্ধে খেলার শুরুতেই স্যামসন সিয়াসিয়ার গোলে নাইজেরিয়া এগিয়ে থাকলেও ক্লদিও ক্যানিজিয়ার কল্যাণে বেশিক্ষণ পিছিয়ে থাকতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে। প্রথম হাফেই নাইজেরিয়ার জালে দুইবার বল পাঠান এই স্ট্রাইকার। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোন গোল না হওয়ায় পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে ডিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা। তবে সেবার দু’দলেরই বিশ্বকাপ যাত্রা থামে কোয়ার্টার ফাইনালে এসে।
২০০২, কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপ
আর্জেন্টিনা ১-০ নাইজেরিয়া১৯৯৪ সালের পর আবারও একই গ্রুপে পড়ে লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা আর আফ্রিকান নাইজেরিয়া। গ্রুপ ‘এফ’ এর উদ্বোধনী ম্যাচে জাপানের কাশিমা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় এ দু’দল। ম্যাড়ম্যাড়ে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। দ্বিতীয়ার্ধে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার হেডের কল্যাণে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। আর ওই এক গোলের ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ।
ক্রেসপো-বাতিস্তুতাদের আক্রমণভাগে রেখে বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই সেবার টুর্নামেন্ট খেলতে আসে আর্জেন্টিনা। তবে আশ্চর্যজনকভাবে ওই এক নাইজেরিয়াকেই হারাতে পারে তারা। যার ফলে পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় আলবিসেলেস্তেদের। নাইজেরিয়াও গ্রুপ পর্ব থেকেই বাড়ির পথ ধরে।
Advertisement
২০১০, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ
আর্জেন্টিনা ১-০ নাইজেরিয়া১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ী ম্যারাডোনাকে সেবার কোচ করে বিশ্বকাপ খেলতে আসে আর্জেন্টাইনরা। ১৯৯৪ আর ২০০২ বিশ্বকাপের ন্যায় এ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার গ্রুপ সঙ্গী হয় নাইজেরিয়া। আক্রমণভাগে সে সময়ের সেরা স্ট্রাইকার কার্লোস তেভেজ, গঞ্জালো হিগুয়াইন আর লিওনেল মেসিকে দেখে যেকোনো দলেরই কাঁপুনি উঠে যাওয়ার কথা। তবে মাঠে নিজেদের নামের প্রতি কেউই সুবিচার করতে পারেনি সেবার। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে কষ্টার্জিত ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। তবে টেনেটুনে আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারলেও গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয় আফ্রিকান সুপার ঈগলরা।
২০১৪, ব্রাজিল বিশ্বকাপ
নাইজেরিয়া ২-৩ আর্জেন্টিনা২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের পর টানা দ্বিতীয়বারের মত একই গ্রুপে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া। তবে আগের বিশ্বকাপের মত ম্যাড়ম্যাড়ে হয়নি এ ম্যাচ। আগের তিনবারের মত এই বিশ্বকাপেও শেষ হাসি হাসে আর্জেন্টিনাই। তবে তাদের ঘাম ঝরিয়ে ছাড়ে নাইজেরিয়া।
ডি মারিয়ার শ্যুট রিবাউন্ডে জালে পাঠিয়ে শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধের শেষে এসে দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে নিজের আর দলের গোলসংখ্যা বাড়িয়ে নেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। তবে নাইজেরিয়ার আহমেদ মুসাও জোড়া গোল করে আর্জেন্টিনাকে চোখ রাঙানি দিতে থাকে। শেষমেশ ফুলব্যাক মার্কোস রোহোর হেডারে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তেরা। সেই সাথে নাইজেরিয়ার সাথে কখনও বিশ্বকাপে না হারার রেকর্ডটি অক্ষুণ্ণই রাখে আর্জেন্টাইনরা।
এসএস/এমএমআর/জেআইএম