আন্তর্জাতিক

ছয় বছরের মেয়েটা কোথায় আছে জানেন না বাবা

অভিবাসীদের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে হাজার হাজার শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক বাবা-মা জানেনই না এখন তাদের সন্তানরা কোথায় আছে।

Advertisement

সবুজ ইউনিফর্ম পরা অভিবাসন দফতরের কর্মীরা এসে উইডোস পোর্টিওর কাছ থেকে তার ছয় বছরের মেয়েকে আলাদা করেছিলেন। তারা জানিয়েছিলেন, পুরো বিষয়টাই সাময়িক। উইডোস ভেবেছিলেন হয়তো কিছু সময় পরেই মেয়েকে ফিরে পাবেন। কিন্তু কয়েক মাস কেটে গেলেও মেয়ের দেখা পাননি বাবা।

উইডোসকে এল সালভাদোরে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়ে মেবেলিন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রেরই কোথাও রয়েছে। কিন্তু আসলেই সে কোথায় আছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না তার বাবা। উইডোসের মতো আরও অন্তত দু’হাজার পরিবার এমন বিপাকে পড়েছে। প্রেসিডেন্টের নির্দেশেই যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের জেরে আটক প্রত্যেক পরিবার থেকে তাদের শিশুদের আলাদা করা হয়েছে। দেশ জুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে গত সপ্তাহে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে কিছুটা পিছু হটেছেন ট্রাম্প।

শিশুদের পরিবার থেকে আলাদা করার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপরেও বহু বাবা-মা প্রশাসনিক জটে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন। সন্তান কোথায়, তারা জানেনই না। আদৌ কখনও একসঙ্গে হতে পারবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে।

Advertisement

মেয়েকে হারিয়ে অনেকটা আক্ষেপ করেই উইডোস বলেন, কেউ আমেরিকায় যাবেন না। সন্তানকে নিয়ে তো নয়ই। আমার মতো অবস্থায় যেন কেউ না পড়ে। দেশে ফিরে একটা এক কামরার ঘর জোগাড় করেছেন তিনি। অন্ধকার, সূর্যের আলো ঢোকে না। বিদ্যুৎ নেই। ঘরের এক কোণে কয়েকটা ছাগল রয়েছে। তাদের সঙ্গেই বাস।

যত কষ্ট করেই হোক না কেন অর্থের ব্যবস্থা করে ফের আমেরিকা যেতে চান তিনি। মেয়ে মেবেলিনকে ফিরিয়ে আনতে হবেই। মার্কিন শুল্ক এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মুখপাত্র একটি বিবৃতি জারি করে বলেছেন, যেসব অভিযোগ উঠেছে তারা তা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তাদের নারী কিংবা পুরুষ কর্মীরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র। সেটাও যথেষ্ট সম্মান দেখিয়ে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিশুদের বিষয়টি ভীষণ স্পর্শকাতর। তাদের কীসে ভাল, সেটাই প্রথমে দেখা হচ্ছে।

অভিবাসন, শুল্ক, এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিভাগের মুখপাত্র সারা রডরিগেজ বলেন, গত ১৯ জুন উইডোস লিখিত ভাবে জানিয়েছেন মেয়েকে ছাড়াই তাকে এল সালভাদোরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আইসিইর হেফাজতে থাকা প্রত্যেকে চাইলে প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। সেই অধিকার তাদের রয়েছে।

কিন্তু তাকে তো এ সব বলা হয়নি, দাবি উইডোসের। গত শুক্রবার সমুদ্রতীরবর্তী ইউসুইউটান প্রদেশে পৌঁছেছেন তিনি। আপাতত ভুট্টা খেতে কাজ নিয়েছেন। তাতে দৈনিক ৭ ডলার রোজগার হয়। এক কামরার ঘরটা পেতে তাকে সাহায্য করেছেন তার ভাই। দু’টি গদি রয়েছে। একটা মেবেলিনের জন্য। ওর ছোট্ট ছোট্ট জামাকাপড়গুলোও সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন উইডোস।

Advertisement

টিটিএন/জেআইএম