গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে এ নির্বাচন শুরু হয়ে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
Advertisement
এদিকে মঙ্গলবার সকালে নগরীতে সামান্য বৃষ্টি হলেও এখন আর সেটা নেই। তারপরও ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার সংখ্যা একেবারেই কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচনে ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে। নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, এবিবিএন, আনসারসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রায় ১১ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
Advertisement
নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৫৭টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, সংরক্ষিত আসনে ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স রয়েছে। এছাড়া ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭টি এবং অতিরিক্ত একটিসহ মোট ৫৮টি টিম মোতায়েন রয়েছে।
প্রতি দুইটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে। এদের মধ্যে ৭ প্লাটুন কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায়, ১০ প্লাটুন টঙ্গী এলাকায় এবং ১২ প্লাটুন জয়দেবপুর, বাসন চান্দনা চৌরাস্তা ও কাউলতিয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।
এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সমন্বয়ে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৮টি মোবাইল ফোর্স, ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে।
নির্বাচনের আগে ও পরে চার দিন ৫৭টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। আরো ১০ জন অতিরিক্ত হিসেবে সর্বমোট ৬৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন রয়েছেন। সিটি কর্পোরেশনের প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে মোট ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। তারা ২৪ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত নগরীতে দায়িত্ব পালন করছেন।
Advertisement
ছয় কেন্দ্রে ইভিএম
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ছয়টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন্দ্রগুলো হলো চাপুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার ২৪৮০), চাপুলিয়া মফিজউদ্দিন খান উচ্চ বিদ্যালয় (ভোটার ২৫৫২), পশ্চিম জয়দেবপুরের মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার ২৫৬২), মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার ২৮২৭), রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার-১৯২৭) এবং রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার-২০৭৭)।
সিটি কর্পোরেশনের ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৭টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ৮৮টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ, আনসার ভিডিপিসহ ২৪ (১২ জন অস্ত্রধারী) জন সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। আর সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ২২ (১০ জন অস্ত্রধারীসহ) জন সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
৫৭টি সাধারণ এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড বিশিষ্ট এ সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭ জন। এর মধ্যে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ জন পুরুষ এবং ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন নারী ভোটার। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমীন (কাস্তে), ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাত পাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমেদ (টেবিল ঘড়ি)সহ ৭ জন মেয়র প্রার্থী, ৮৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৩২৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। এবার এর দ্বিতীয় নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ২৪ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। ১৫ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়োর কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে স্থগিতাদেশ এবং পরে আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৮ জুন থেকে পুনরায় ২য় পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয় এবং সে অনুযায়ী আজ ২৬ জুন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এফএ/জেআইএম