খেলাধুলা

সেন্ট পিটার্সবার্গে দেখা যাবে কি ‘ঢাকার মেসি’কে?

৬ সেপ্টেম্বর ২০১১। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে সেদিন যাদের ভাগ্য হয়েছিল আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচটি দেখার, তাদের চোখে এখনো আঠার মতো লেগে আছে মেসির পায়ের জাদুকরি সেই ফুটবলশৈলি। যারা দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়েছেন টিভিতে খেলা দেখে, তাদেরও বার্সেলোনা তারকার অসাধারণ নৈপূণ্য মনে থাকবে বহুদিন।

Advertisement

ম্যারাডোনা বাংলাদেশে সমর্থক বাড়িয়েছেন আর্জেন্টিনার। মেসি সেখানে যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। সাত বছর আগে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার ওই ম্যাচ ঘিরে ঢাকায় যে উম্মাদনা তৈরি হয়েছিল, তার প্রধান কারণ ও আকর্ষণ ছিলেন মেসি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন যেদিন ঘোষণা করেছিলেন, আর্জেন্টিনাকে আনবেন ঢাকায়; তারপর থেকেই একটা প্রশ্ন ছিল সবার, দলে মেসি থাকবেন তো?

মেসিকে নিয়েই ঢাকায় গিয়েছিলেন দলের তৎকালীন কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এক বেলা অনুশীলন ও একটি ম্যাচ খেলে ভক্তদের পুরোপুরি তৃপ্ত করেছিলেন লিওনেল মেসি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার এঁকেছিলেন ফুটবলের অসাধারণ ছবি। ফুটবলের এ মহা তারকাকে স্বাগত জানিয়েছিল ঢাকা। মেসিও মাতিয়ে এসেছিলেন তার বাংলাদেশি ভক্তদের।

৩-১ গোলের জয় পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। গোল করেছিলেন হিগুয়াইন ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। আরেকটি ছিল নাইজেরিয়ার আত্মঘাতী। মেসির পা থেকে গোল আসেনি; কিন্তু মেসিই ছিলেন সেই ম্যাচের নায়ক। গোলের উৎস। বিশেষ করে ডি মারিয়ার করা গোলটি ছিল মেসির অসাধারণ পায়ের কারুকাজের ফসল।

Advertisement

মাঠের ঠিক মাঝরেখা থেকে নাইজেরিয়ার এক খেলোয়াড়ের পা থেকে ছোঁ মেরে বল নিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটলেন। সামনে যে আসলেন তাকেই কাটালেন। মেসির গতি আর ড্রিবলিংয়ে ছিটকে পড়তে থাকলেন একজন করে নাইজেরিয়ান ফুটবলার। ৫ জনকে কাটিয়ে ডি বক্সে ঢুকে শরীরের গতিতে ফেলে দিলেন সর্বশেষ ডিফেন্ডারকেও। তার পরে গেলেন গোলরক্ষক। সামনে থাকা ডি মারিয়াকে বলটি ঠেলেন দিলেন মেসি। ব্যবধান দ্বিগুণ হলো আর্জেন্টিনার। এ গোলের আগের মিনিটেই মেসির পাস থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হিগুয়াইন।

দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার লড়াইয়ে সেই নাইজেরিয়ার সামনেই লা আলবিসেলেস্তেরা। আর্জেন্টিনায় মঙ্গলবার যেমন লাখ লাখ মানুষ তাকিয়ে থাকবেন মেসির দিকে। কম যাবে না বাংলাদেশের কয়েক কোটি মানুষও। ৭ বছর আগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যেমন মেসিকে দেখেছিলেন ঢাকার দর্শকরা, সেই মেসিকেই তারা চাইবেন সেন্ট পিটার্সবার্গে। ‘ঢাকার মেসি’কে এখানে দেখা গেলেই ছিঁড়তে পারে আর্জেন্টিনার ভাগ্যের শিঁকে।

আরআই/আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement