দেশজুড়ে

মতপার্থক্য ভুলে ঐক্যবদ্ধ আ.লীগ, বিএনপিতে দ্বন্দ্ব

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগে একাধিক দলীয় প্রার্থী থাকলেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ছয়জন নেতা তৎপর থাকায় সিলেট আওয়ামী লীগ নেতাদের মতপার্থক্য ও বিভেদ দেখা দেয়। বিভন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন দলের শীর্ষ নেতারা। তবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণার পর সেই বিভক্তিও আর থাকছে না। অন্যদিকে বিএনপিতে মেয়র পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।

Advertisement

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে কামরানের জন্য তারা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। কামরানও সবার সহযোগিতায় নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

তবে প্রথম দিকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল আনোয়ার, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও টানা তিনবারের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এবং সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম।

এদিকে সিলেট সিটি নির্বাচনে বিভেদের কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী ঠিক করতে ব্যর্থ হওয়ায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৪১ নেতাকে ডেকে পাঠান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার বিকেলে গণভবনে এ সব নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানে শেখ হাসিনা সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে কামরানের নাম ঘোষণা করেন।

Advertisement

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, দলের সবার স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা পাচ্ছি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সবাই পাশে আছেন। সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘জননেত্রীর মনোনীত প্রার্থী কামরানকে বিজয়ী করতে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী মাঠে কাজ শুরু করেছেন। এখানে কোনো বিভেদ নেই, দ্বন্দ্ব নেই।

সিলেটে আওয়ামী লীগে মেয়র প্রার্থী নিয়ে যখন ঐক্যের সুর ঠিক তখন বিএনপিতে চলছে অস্থিরতা। বিএনপির মেয়র প্রার্থী কে হচ্ছেন, এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সিলেটে নানামুখী আলোচনা চলছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত দলটি থেকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের দৌড়ে ছিলেন পাঁচ নেতা। সিসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাট্টা সিলেট বিএনপির অন্যসব মেয়র প্রার্থী।

রোববার বিএনপি বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও সিলেটের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দলটি। ফলে সিলেট সিটিতে কে হচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নগরবাসীর মধ্যেও জল্পনা-কল্পনা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

সিলেটে মেয়র পদে ৫ জন নেতা বিএনপির মনোনয়ন দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত আরিফুল হক ও বদরুজ্জামান সেলিম এই দু’জনের মধ্যে একজনকে দল বেছে নিতে পারে বলে জানা গেছে।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক শীর্ষ নেতা আরিফের পক্ষে ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত এক শীর্ষ নেতা সেলিমকে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে বলে জানা গেছে।

রোববার রাজশাহীতে বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও বরিশালে মজিবর রহমান সরোয়ারকে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সোমবার সিলেটের মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন তারা।

সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবারও মেয়র প্রার্থী হতে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন,তাকেই প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে দল। মাঠে তৎপরত থাকারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা কেবল বাকী।

আর বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, বিএনপি নয়, আরিফকে মনোনয়ন দিচ্ছে মিডিয়া। বিএনপি সিলেটের প্রার্থীর ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।

ছামির মাহমুদ/আরএ/জেআইএম