জাতীয়

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বেশ কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২৫ জুন) সচিবালয়ে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

Advertisement

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বৈঠকের শুরুতেই সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- সড়কে যে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটছে তা কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন।’

‘এর মধ্যে রয়েছে- ড্রাইভার ও হেলপারদের (চালকের সহকারী) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। লং ডিস্টেন্স (দূর পাল্লার) ড্রাইভিং যারা করেন সেখানে বিকল্প ড্রাইভারের ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ একজন ড্রাইভারের গাড়ি চালনা একটানা ৫ ঘণ্টার বেশি যেন না হয়। এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটা নিয়ম, যে একজন ড্রাইভার দূরপাল্লায় ৫ ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাবে না।’

প্রধানমন্ত্রী রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর সার্ভিস সেন্টার বা বিশ্রামাগার তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যেখানে ড্রাইভাররা বিশ্রাম নিতে পারবেন এবং আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে।’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তায় পারাপারের ক্ষেত্রে পথচারীদের অনিয়মতান্ত্রিক পারাপার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। রাস্তায় সিগন্যাল যেন চালু থাকে। লোকজন যেন সিগন্যাল যেন মেনে চলে সেই ব্যবস্থা করা। জেব্রা ক্রসিং পথচারীদের জন্য অপরিহার্য করা। গাড়িতে যাত্রী ও চালকের সিটবেল্ট পরা নিয়ন্ত্রণ, যাতে তারা অবশ্যই সিটবেল্ট পরে চলেন।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এই বিষয়গুলো আরও নিবিড়ভাবে দেখার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং নৌপরিবহনমন্ত্রীকে মাঝে মধ্যে বসে বিষয়টি পরিবীক্ষণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটা ওনাদের নিয়মিত দায়িত্বের মধ্যেই রয়েছে, তারপরও একটু বসে আলাপ করা আর কি।’

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আগে অনেক সুপারিশ করা হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন নেই- এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেছেন কি-না জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, ‘ওটা বাস্তবায়নের জন্যই তিনজনকে মাঝে মধ্যে বসার জন্য বলেছেন। কনসার্ন হলেন ওনারা তিনজনই বেশি।’

প্রধানমন্ত্রী কেন সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নির্দেশনা দিলেন- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ঈদের পর পরই বেশকিছু লোক মারা গেছে দুর্ঘটনায়। আমরা যখন মিটিং শুরু করি তখনই পাঁচজন মারা গেছে টাঙ্গাইলে।’

Advertisement

বিআরটিএ তো ফিটনেসবিহীন গাড়ি রোধ করতে পারছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শফিউল আলম বলেন, ‘আসলে এনফোর্সমেন্টের বিষয়টা তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা হয়েছে। শুধু বিআরটিএ একা এটা পারবে না।’

আমাদের দেশের বাস মালিকরা দূরপাল্লায় বিকল্প চালক রাখেন না, এছাড়া গাড়িগুলোতে সিটবেল্ট নেই- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আস্তে আস্তে করতে হবে। এগুলো না করলে কীভাবে হবে। দেখা গেছে অনেক দুর্ঘটনাই সিটবেল্ট না বাঁধার কারণে হয়। যেমন- মিশুক মুনির, ওনাদের যে কেইসটা তা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওনারা সামনে বসা ছিলেন কিন্তু সিটবেল্ট বাঁধেননি।’

সড়ক পরিবহন আইন কঠোর করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘কিন্তু ওটা এখনও পাস হয়নি। আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে আছে। এটা নিয়েও আলোচনা হয়। যাতে দ্রুততার সাথে ভেটিং বা নিষ্পত্তি করা হয়।’

আরএমএম/আরএস/জেআইএম