আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়নের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপির অপকর্মও তুলে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে কী হয় আর বিএনপি থাকলে কী হয় এ দুটির পার্থক্য জনগণকে বোঝাতে হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় এলে ৯ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা লুটপাট করে খাবে। দেশকে ধ্বংস করে ফেলবে।
শনিবার (২৩ জুন) দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, দলীয় সংসদ সদস্য, মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ চার হাজারের বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজ এমপিদের নয়, নিজ এলাকায় যার জনপ্রিয়তা রয়েছে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। যেসব এমপি টাকা নিয়ে কাজ করেন, দুর্নীতি করেন, তারা নমিনেশন পাবেন না। নমিনেশন দেয়া হবে এলাকায় জনপ্রিয়তা দেখে। কেউ দলের বিরুদ্ধে কথা বললে তার মনোনয়ন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভোটের রাজনীতি করতে হলে উন্নয়নের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। দুঃসময়ে দলের হাল ধরে রাখা কর্মীরা যাতে অবহেলিত না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের স্বার্থে মহাজোট করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের। এ ছাড়া আওয়ামী লীগে সুযোগ সন্ধানীদের প্রতি নজর রাখতে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীরা যাতে ভোট না পায় সে ব্যাপারে সজাগ থাকারও নির্দেশ দেন তিনি।
বাঙালির যা কিছু অর্জন সবই আওয়ামী লীগের শাসনামলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশকে স্বাধীন করার জন্য। সব ধর্মের মানুষের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। ৭৫ এর পর দেশের ক্ষমতা ছিল ক্যান্টনমেন্টে বন্দী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের জন্য কাজ করেছে। রাজনীতি সঠিক হলে এবং দেশের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন হয় এটি প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ কথা দিলে কথা রাখে।
Advertisement
বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজদের দলে রাখার জন্য দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে নিজেদের দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে প্রমাণ করেছে বিএনপি। বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর বিএনপি এমন একজনকে দলের চেয়ারপারসন বানিয়েছেন যিনি দুর্নীতিবাজ ও দুর্নীতি মামলার আসামি। তাকে নেতা বানানোর জন্য দলের গঠনতন্ত্র পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয়েছে। তাদের এ কর্মকাণ্ডের জন্য শুধু দেশে নয়, বিদেশিরাও বিষোদগার করছে। এ ধরনের দল ক্ষমতায় এলে কখনও উন্নয়ন হতে পারে না।
বিদ্যুতের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি শাসনামলে বিদ্যুতের কী অবস্থা ছিল এটা সবাই জানেন। ঘন ঘন লোড শেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। খালদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের খাম্বার ব্যবসা ছিল এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় শুধু খাম্বা গেছে, বিদ্যুৎ যায়নি। আওয়ামী লীগ টানা ৯ বছর ক্ষামতায় থাকার কারণে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের ৯৩ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। গ্রামের মানুষ এখন রাইস কুকারে ভাত রান্না করে। ভ্যান ও রিকশা চালকরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে রিকশা-ভ্যান চালায়।
দেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের সময় হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ উন্নয়নের পথে হাঁটছে। দেশের পাঁচ কোটি মানুষ এখন নিম্ন থেকে মধ্য আয়ে উঠে এসেছে। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার মধ্যমে সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করব। দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক। যা বিএনপির সময় দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাই দেশকে সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করার লক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
এফএইচএস/এএইচ/আরআইপি