জাতীয়

ঈদের পরই ব্যস্ত রাজধানীতে জলজট-যানজট

সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ১০টার পর সে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তির শুরু রাজধানীতে। ঈদুল ফিতরের ছুটির পর আজ (শনিবার) মানুষের কর্মব্যস্ততায় রাজধানীতে ফেরে চাঞ্চল্যতা, সঙ্গে যানজটের ভোগান্তিও। যানজটের কবলে অফিসগামী চাকরিজীবী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীররা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে রোগী নিয়ে স্বজনদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে যানজট।

Advertisement

শনিবার দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সরেজমিনে, রাজধানীর আগাঁরগাও বিজয় সরণি, সংসদ ভবনের পূর্ব পাশের এলাকায় জলজট দেখা গেছে। জলজটের কারণে রাস্তায় স্থবির হয়ে পড়ে যান চলাচল। সঙ্গত কারণে সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে বলছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের যথাসম্ভব চেষ্টা সত্ত্বেও যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে হাঁটু পানি জমে থাকায় যানজট আরও বাড়িয়েছে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে বিজয় সরণি ঢোকার মুখের উভয় পাশের সড়কে তীব্র যানজট লক্ষ্য করা যায়। ফার্মগেট থেকে বিজয় সরণি ও মহাখালী থেকে ফার্মগেট যাওয়ার সড়কেও যান চলাচলে স্থবির অবস্থায় লক্ষ্য করা যায়।

Advertisement

কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে সড়কেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। অনেক পথচারীকে হাঁটুর ওপরে প্যান্ট গুটিয়ে জুতা হাতে হাঁটা শুরু করতে দেখা যায়।

বৃষ্টি কমার পরপরই রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গভবন, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রাপা প্লাজা সংলগ্ন সড়ক, গ্রিন রোড, বাড্ডা, মিরপুরের কাজীপাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের পাশের সড়ক, মিরপুর ১০ নম্বর, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। সেসব সড়কে গণপরিবহন ও রিকশা না থাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি পেরিয়ে পায়ে হেঁটে অনেককে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর মিরপুর রোড, শ্যামলী, মিরপুর ১০ নম্বর, ধানমন্ডি-২৭ নম্বর এলাকায় যানজট দেখা গেছে। এসব সড়কের সিগন্যাল পার হতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগছে।

বিজয় সরণি এলাকার ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য বলেন, ঈদের পর আজ শনিবার অধিকাংশ বেসরকারি অফিসে ফিরেছেন কর্মব্যস্ত মানুষ। সকাল থেকেই যানবাহনের চাপ শুরু হয়। বৃষ্টির কারণে প্রধান সড়ক ও এর আশপাশ এলাকার সড়কগুলোর পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া এক রকম বন্ধ। তৈরি হওয়া জলাবদ্ধাতাই যানজটের বড় কারণ।

Advertisement

ডিএমপির ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগরে তেজগাঁও এলাকার এডিসি মঞ্জুর মোর্শেদ জাগো নিউজকে বলেন, পানি নিষ্কারণের দায়িত্ব কিন্তু পুলিশের নয়। যেখানে স্বাভাবিক দিনেই রাজধানীর যানজট নিরসনে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয় সেখানে জলাবদ্ধতা যানজট তৈরিতে মাত্রা তৈরি করেছে। তবে আমরা আমাদের দায়িত্বটা ঠিকমতো পালনের সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। যেখানে পানি জমেছে, তার সাইট দিয়ে যান চলাচল স্মুথ (সহজ) করার চেষ্টা চলছে। কোথাও যেন গাড়ি না দাঁড়ায়, ধীরে হলেও যেন যানবাহন চলতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনের সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় তীব্র সমালোচনা করে মতিঝিল অফিসগামী আজিজুর রহমান বলেন, ওয়াসার কাজ পানি নিষ্কাশনে পদক্ষেপ নেয়া। সেখানে উল্টো চিত্র। খোদ ওয়াসা ভবনের সামনের সড়কে হাঁটু পানি।

অন্যদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও সাত রাস্তা ও লাভ রোডেও জলজটের কারণে অফিসগামী মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল বলে জানিয়েছে ট্রাফিক উত্তর বিভাগ।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সহকারী কমিশনার রুমানা নাসরিন জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা ভাঙায় বৃষ্টিতে সকালে হাঁটু পানি জমেছিল। গাড়ির চাপ কম থাকলেও জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তায় যান চলাচলে গতি হারায়। এর মধ্যে রাস্তায় বেশ কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা বিকল হয়ে পড়ায় রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। পরে সেসব বিকল যানবাহন সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পানি নিষ্কাশনে যান চলাচলে গতি ফিরেছে। মোটামুটি ক্লিয়ার। এখন যানজট নেই।

জেইউ/এআর/এমবিআর/এমএস