দেশজুড়ে

মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরও দুই লাশ

দেশের ছয় জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গাইবান্ধায় ১৭, রংপুরে ৬, গোপালগঞ্জে ২, সিরাজগঞ্জে ২, নাটোরে ২ ও ফরিদপুরে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার মধ্যরাত ও শনিবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্তারিত পড়ুন জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে.....

Advertisement

গাইবান্ধা

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ঢাকা থেকে সৈয়দপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ১৭ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন।

শনিবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে উপজেলার ব্র্যাক মোড় সংলগ্ন বাঁশকাটা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এখনও হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আরিফ হোসেন জানান, ঢাকা থেকে সৈয়দপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আলম এন্টারপ্রাইজের একটি যাত্রীবাহী বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৬৪২২) বাঁশকাটা নামক স্থানে পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থল ও স্থানীয় হাসপাতালে ১৬ জন ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপতালে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।

রংপুর

রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীরে বালুবাহী ট্রাকচাপায় ৬ বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন। শুক্রবার রাত ২টার দিকে পাগলাপীরের সলেয়াশাহ বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নিশাত (২০) এবং সাজ্জাদ (১৯) নামে দুইজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা দিনাজপুর শহরতলী এলাকার বাসিন্দা। নিহতরা সবাই পোশাক শ্রমিক। ঈদ শেষে তারা কর্মস্থলে ফিরছিলেন বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

Advertisement

তারাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল্লাহ হেল বাকী জানান, দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বিআরটিসির ডাবলডেকার ঈদ স্পেশাল বাসটির পেছনের চাকা ফেটে গেলে সেটি মেরামতের জন্য সলেয়াশাহ বাজার এলাকায় বাসটি অবস্থান নেয়। এসময় প্রচণ্ড গরমের কারণে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে বাসের পেছেনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সিগন্যাল লাইট না জ্বালিয়ে বাসের চাকা মেরামতের সময় বালুবাহী একটি ট্রাক পেছন থেকে এসে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের চাপা দিয়ে বাসটির পেছনে ধাক্কা দেয়।

গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া বাজারে লোকাল বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ভ্যানকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরো ১০ জন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, টুঙ্গিপাড়া থেকে ছেড়ে আসা গোপালগঞ্জগামী একটি লোকাল বাস ঘোনাপাড়া মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি মোটরসাইকেল আরোহীকে ধাক্কা দেয়। এরপর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যান ও মাহেন্দ্রাকে ধাক্কা দিয়ে আইল্যান্ডে উঠে পড়ে আরও একটি বাসকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসচাপায় দুইজন নিহত হন।

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ভুইয়াগাতীতে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও ২০ বাসযাত্রী। শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের ভুইয়াগাতী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতেরা হলেন, রায়গঞ্জ উপজেলার শ্যামনাই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ট্রাকচালক শরিফ ফকির (৩৫), একই গ্রামের ধুকু মিয়ার ছেলে হেলপার রফিকুল ইসলাম (৩০)।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর কাদির জিলানী জানান, বগুড়া থেকে ঢাকাগামী আরকে পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ভুইয়াগাঁতী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকের চালক ও হেলপার নিহত হন।

নাটোর

নাটোর শহরের আলাইপুরে বালুভর্তি ট্রাকচাপায় নারীসহ দুই অটোরিকশা যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অন্তঃত তিনজন।

শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শহরের আলাইপুরস্থ কমলা সুপার মার্কেটের সামনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন, নলডাঙ্গা থানার সোনাপাতিল গ্রামের মঙ্গল দেবনাথের স্ত্রী সুলতা দেবনাথ ও একই এলাকার কার্ত্তিক চন্দ্র দেবনাথের ছেলে কানাই দেবনাথ।

নাটোর সদর থানার ওসি মশিউর রহমান ও ফায়ার ব্রিগেড স্টেশন অফিসার মুহিউদ্দীন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নলডাঙ্গা থেকে নাটোরগামী যাত্রীবোঝাই একটি অটোরিকশাকে নাটোর শহরের আলাইপুরস্থ কমলা সুপার মার্কেটের সামনে বালু ভর্তি একটি ট্রাক পেছন থেকে চাপা দিলে অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দু’জন নিহত ও অপর তিন যাত্রী আহত হন।

ফরিদপুর

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যাত্রীবাহী তুহিন পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে বাসের চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরো ২০ জন। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সদরদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাসের চালক ও হেলপারের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুজ্জামান জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙ্গার পূর্ব সদরদি এলাকায় বরিশাল থেকে রাজশাহীগামী তুহিন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই দুই ব্যক্তি নিহত হন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ যাত্রী। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এফএ/এমএস