আন্তর্জাতিক

ভূমধ্যসাগরে দুই দিনে ২১৫ জনের মৃত্যু

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দুই দিনে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া ছেড়ে ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে ২১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

জাতিসংঘ বলছে, মঙ্গলবার ১০০ যাত্রী একটি কাঠের নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়। নৌকাটি ডুবে গেলে ৯৫ জন নিহত হন। পরে লিবিয়ান ন্যাশনাল গার্ড দেশটির রাজধানী ত্রিপলির কাছ থেকে নৌকাটি উদ্ধার করে। একইদিনে উপকূলের আরেক স্থানে একটি নৌকা ডুবে ৭০ জন নিহত হন। ওই নৌকাটিতে ১৩০ জন যাত্রী ছিলেন।

প্রথম ঘটনাটির উদ্ধার হওয়া ৫ জনকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ৬০ জনকে আবার লিবিয়ায় ফেরত নেয়া হয়েছে। তবে তাদের কোনো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কি না তা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে স্পষ্ট নয়।

একদিন পর কোস্ট গার্ডকে ত্রিপলি থেকে ৪০ মাইল পূর্বে গারাবুলিতে পাঠানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখান থেকে ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলছেন, এইসব মৃত্যুই প্রমাণ করে যে যুদ্ধ ও দারিদ্রের কারণে মানুষ এখনও তাদের সবটুকু সঞ্চয়, সম্মানের বিনিময়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেচ্ছে নিচ্ছে, শেষ পর্যন্ত যার জন্য তাদের নিজের জীবনটাও দিতে হচ্ছে।

এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনাগুলো বিরল নয়। লিবিয়া ছাড়তে গিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতেও ৯০ জন নিহত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল জাতিসংঘ। আর লিবিয়ান নৌবাহিনী জানিয়েছিল এপ্রিলে মারা যায় আরও ১১ জন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী লিবিয়াতে ৭ থেকে ১০ লাখের মতো অভিবাসী রয়েছে। আর দেশটির মোট জনসংখ্যা ৬২ লাখের মতো।

আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ রয়েছে এই লিবিয়াতে। আর সে কারণে এ দেশটিকে অনেকে সৌভাগ্যের দুয়ার বলে মনে করেন।

Advertisement

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা এবং দারিদ্যের আঘাতে জর্জরিত হয়ে আছে লিবিয়া। ২০১১ সালে দেশটির সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেটির পর এখন দেশটিতে দ্বিতীয় দফার গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটিতে বিদ্যমান ক্রীতদাস ব্যবসা নিয়ে সিএনএনের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর যুক্তরাষ্ট্র দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এসবের পরও লিবিয়ায় অভিবাসনে ভাটা পড়েনি। সংঘর্ষ এড়িয়ে ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক, উপমহাদেশের এমন সবার কাছে ভৌগলিক কারণে লিবিয়ার আলাদা জনপ্রিয়তা রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালিতে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ ঢোকে।

সূত্র : সিএনএন।

এনএফ/এমএস