অর্থনীতি

সুদহার না কমালে কর্পোরেট ট্যাক্স সুবিধা বন্ধ : এনবিআর

২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যদি ব্যাংকগুলো সুদহার না কমায় তাহলে কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর সুবিধা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২১ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) বাজেট আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন এমসিসিআইয়ের সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

বাজেটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থান করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর ও এমসিসিআইয়ের ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশন সাব-কমিটির সদস্য আদিব এইচ খান।

Advertisement

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কর্পোরেট ট্যাক্স নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। বলা হচ্ছে আমরা ব্যাংকারদের সুবিধা দিয়েছি। প্রকৃত অর্থে তারা সৌভাগ্যক্রমে সুবিধা পেয়েছে। তবে সবার ক্ষেত্রে কমানো হলে অনেক র‌্যাভিনিউ কম হত। তাই কমানো সম্ভব হয়নি। আমরা তাদের কর্পোরেট করহার কমিয়েছি, যাতে তারা সুদের হার কমাতে পারে।

তিনি বলেন, ব্যাংকের কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর মূল উদ্দেশ্য ঋণের সুদহার কমানো। এতে বিনিয়োগ বাড়বে। যদিও সুদহার কামানোর শর্ত আরোপ করা হয়নি। আল্টিমেটলি এ শর্ত আরোপ করা হবে যে ঋণের সুদ না কমালে কর্পোরেট ট্যাক্সের সুবিধা দেয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, এর আভাস আজই পাওয়া গেছে। ব্যাংকগুলো সুদহার ঘোষণা করেছে। তারা নামিয়ে আনবে।

সঞ্চয়পত্রের সুদহার প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সঞ্চয়পত্রকে অটোমেশনের আওতায় আনা হবে। সঞ্চয়পত্রে সুদহারকে একটা রিজনেবল অবস্থায় আনা হবে। বেশি কমানো ঠিক হবে না।

Advertisement

নেহাদ কবির বলেন, শুধু কিছু ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। অথচ অসংখ্য কোম্পানি রয়েছে যাদের করহার কমানো হয়নি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রেও করহার কমানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ করহার কমানোর ক্ষেত্রে কিছুটা লেবেল প্লেইং ফিল্ড মেনে করা উচিত।

আহসান এইচ মুনসুর বলেন, তিন কারণে লোকাল ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। এর একটি ব্যাংকের ডিপোজিট গ্রোথ কমে গেছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৯.৪ শতাংশ ডিপোজিট গ্রোথ ছিল। চলতি অর্থবছর তা নেমেছে ৯.৫ শতাংশে। হাই নন পারফরমিং লোন (এনপিএল) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার বিক্রি এই সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) সুদহার বেঁধে দেয়ার ঘোষণার সমালোচনা করে আহসান এইচ মুনসুর বলেন, ‘একটি অ্যাসোসিয়েশন ব্যাংকের সুদহার নির্ধারণ করেছে। সুদহার কোনো অ্যাসোসিয়েশনের বেঁধে দেয়া ঠিক নয়। সুদহার কত হবে তা বাজার নির্ধারণ করবে। তাই এটি বাজারের উপরে ছেড়ে দেয়া উচিত। তবে ১০ শতাংশের ঋণের সুদহার থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ভালো নয়।‘

এসআই/এএইচ/জেআইএম