মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস ও পূণ্য হলো ঈমান বা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। কোনো মানুষকে যদি সুনিশ্চিতভাবে কাফের বা অবিশ্বাসী আখ্যায়িত করা না যায় তবে তাকে কোনোভাবেই কাফের বা অবিশ্বাসী বলা যাবে না। বরং তাকে মুসলিম মেনে নিয়ে অন্তর থেকে ভালোবাসা ঈমানের একান্ত দাবি।
Advertisement
ইসলাম সে মানুষকে ভালোবাসা ফরজ বা আবশ্যক করে দিয়েছেন। তাই নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি আধিপত্য ও খেয়াল-খুশি মোতাবেক কাউকে যেমন কাফের বলা যাবে না তেমনি কারো কোনো দোষের কারণে তাকে ঘৃণাও করা যাবে না।
যদি কোনো মানুষের মধ্যে মন্দ কাজ পাওয়া যায়, কিন্তু সে ঈমানদার তবে তাকে তার মন্দ কাজ থেকে ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে কিন্তু তাকে ঘৃণা করা যাবে না বরং তাকে ভালোবাসতে হবে। আর এমনটিই ঈমানের ফরজ দাবি।
একজন মানুষকে ঈমানদার হিসেবে বিশ্বাস করা ও সাক্ষ্য দেয়ার ব্যাপারে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি ছোট্ট হাদিস জানা থাকাই যথেষ্ট। আর তাহলো-
Advertisement
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি কোনো লোককে এমন দেখতে পাও যে, সে নিয়মতি মসজিদে আসে যায় এবং তার (মসজিদের) তত্ত্বাবধান ও খেদমত করে তখন তোমরা তার ঈমান আছে বলে সাক্ষ্য দেবে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন- নিশ্চয়ই তারাই মসজিদসমূহের আবাদ রাখে; যারা আল্লাহ ও কেয়ামতের দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে।’ (মিশকাত, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, দারেমি)
আরও পড়ুন > রমজান পরবর্তী মাস শাওয়াল ও আমাদের করণীয়
উল্লেখিত হাদিসে মসজিদ আবাদ রাখার অর্থই হলো-
সব সময় মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা, মসজিদের তত্ত্বাবধানে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। নামাজ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, কুরআন তেলাওয়াতসহ যাবতীয় ইবাদত দ্বারা মসজিদকে আবাদ রাখা।
Advertisement
আর যারা উল্লেখিত ইবাদত-বন্দেগি ও কাজের মাধ্যমে মসজিদকে আবাদের মতো পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে পারে, তারা আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও কেয়ামতের দিনের প্রতিও পরিপূর্ণ ঈমান রাখতে পারে। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা সে কথাই ঘোষণা করেছেন-‘তারাইতো আল্লাহর মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করবে; যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে এবং যথাযথভাবে নামাজ পড়ে; জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে ভয়ও করে না; ওদের সম্পর্কে আশা যে, ওরা সৎপথ প্রাপ্ত হবে।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১৮)
বিশেষ করে
যারা মসজিদে বেশি বেশি আসা-যাওয়া করে, মসজিদে খেদমত করে, মসজিদে বসে নফল ইবাদত ও নামাজ আদায় করে কুরআনের ভাষায়ই তারা সুপথ প্রাপ্ত ঈমানদার। আর তাদেরকে ঈমানদার হিসেবে সাক্ষ্য দেয়ার ব্যাপারে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও হাদিসে ঘোষণা দিয়েছেন।
সুতরাং দুনিয়ায় কোনো মানুষকেই নিজেদের মতের সঙ্গে মিল না থাকলে ইসলাম বিদ্বেষী বা অবিশ্বাসী কাফের বলা যাবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত তার কাছে প্রকাশ্য কুফরির কোনো বিষয় প্রকাশ না পায়। বরং অবিশ্বাসী সাব্যস্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সে ব্যক্তিকে মুমিন-মুসলমান মানুষ হিসেবে ভালোবাসা ঈমানের একান্ত দাবি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈমানের বিষয়ে মানুষকে ভালোবাসা এবং মসজিদের খেদমতে নিজেদের নিয়োজিত করার মাধ্যমে ঈমানদার করতে কুরআন-সুন্নাহর ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর