দেশজুড়ে

প্রধানমন্ত্রীর মায়ের নামে মাদরাসা খুলে প্রতারণা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসা’ ব্যানারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সুপারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।  বুধবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের আদেশে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল কাদের কাজী প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় মাদরাসার শিক্ষক, কর্মচারী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে দাসিয়ারছড়া বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পরপরই কৌশলে দাসিয়ারছড়ার অধিবাসী আমিনুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মায়ের নামে ওই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎও করেন। এমনকি মাদরাসার নামের জমি গোপনে নিজের নামে রেকর্ড করে নেন ওই সুপার।

পরে এ দাখিল মাদরাসায় সুপার পদে চাকরি নেন উপজেলার মধ্য কাশিপুর দাখিল মাদরাসার এমপিওভুক্ত সহকারী মৌলভী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম। নব্য প্রতিষ্ঠিত এ মাদরাসায় চাকরি দেয়ার নাম করে ১২ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর কাছ থেকে ৩৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন আমিনুল ইসলাম।

সুপার নিয়োগ ও মাদরাসার অনুমোদন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে তৎকালীন সভাপতি আলতাফ হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর ছাড়া ভুয়া নিয়োগপত্র দেয়ার অভিযোগও পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।

Advertisement

বিষয়টি তৎকালীন সভাপতি ছিটমহল আন্দোলনের নেতা আলতাফ হোসেন জানতে পেয়ে সুপারের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়টি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেন। এছাড়াও মাদরাসার একাডেমিক স্বীকৃতি ও প্রাথমিক অনুমোদনের কোনো অগ্রগতি না দেখে শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের প্রদত্ত টাকা ফেরত চাইলে সুপার আমিনুল ইসলাম টালবাহনা করেন এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদেরকে ভয়ভীতি প্রর্দশন করেন। এক পর্যায়ে তিনি আত্মগোপন থাকতে শুরু করেন।

মাদরাসার সহ-সুপার শাহানুর আলম জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত হলো প্রতিষ্ঠানের নামে জমি থাকতে হবে। কিন্তু সেই জমি সুপার তার নিজ নামে রেকর্ড করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এছাড়াও তিনি ভুয়া কাগজপগ্র দেখিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীর টাকা লুটপাট করেছেন।

এ বিষয়ে সুপার আমিনুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রতিষ্ঠান করার স্বার্থে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান করতে না পারলে টাকা ফেরত দিব।

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল কাদের কাজী জানান,জেলা প্রশাসকের আদেশেই আমি তদন্ত করতে এসেছি। তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে সুপার ৩টি শর্ত মেনে নিয়ে মুচলেকা পত্র দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Advertisement

নাজমুল হোসেন/এফএ/এমএস