যশোরের কপোতাক্ষ নদ থেকে উৎপত্তি হয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মধ্য দিয়ে খোলপেটুয়া নদী হয়ে সুন্দর বনের মধ্যে মিশেছে এক সময়কার প্রমত্তা বেতনা নদী। কালের বিবর্তনে বেতনা নদী হারিয়েছে তার নব্যতা। ভরাট হয়েছে অনেকাংশ। বর্তমানে বেতনা নদীর জেগে ওঠা চরে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা, মাছের ঘের ও অবৈধ স্থাপনা। প্রশাসনের সামনেই ভূমিদস্যুরা এভাবে দখল কার্যক্রম চালালেও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ নেই।
Advertisement
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে অর্থের বিনিময়ে এখানে ইটভাটা গড়ে উঠেছে।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা এলাকার রুহুল আমিন জানান, বুধহাটা এলাকায় বুধহাটা বিক্রস ও নওয়াপাড়া এলাকার সরদার বিক্রস নামে দুটো ইটভাটা বেতনা নদীর জেগে উঠা প্রায় দুইশ বিঘা চর দখল করে ইটভাটা নির্মাণ করেছে। স্থানীয় নেতা, ভূমি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তারা যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার মৌখিক অনুমতি দিচ্ছে। বেতনা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার, ডুবে যাচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট। ভাটার বিষাক্ত জৈব পদাথেূর কারণে জমির উর্বরতা হারাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের লোকজন সবই জানে। প্রশাসনকে বললে বলে ধৈর্য ধর সহ্য কর অপেক্ষা কর কিন্তু কবে এর ফল হবে সেটা আমাদের কারো জানা নেই।
Advertisement
আশাশুনির নওয়াপাড়া এলাকার শাহিনুর রহমান জানান, বেতনা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে, ডুবে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ভাটার জৈব পদার্থের কারণে জমিতে কোনো ফসল হচ্ছে না, ফলের গাছগুলো মারা যাচ্ছে। আশে পাশের মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না।
তিনি বলেন, ভাটার ভেতরে চিংড়ি ঘেরও করছে। এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি এলাকাবাসীর।
অবৈধ দখলের বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেন, এখানে যারা আছে সবাই অবৈধভাবে রয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে তালিকা তৈরি করেছি। অ্যাসিল্যান্ডের মাধ্যমে ইতোমধ্যে যারা অবৈধ দখলদার তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। আশা করছি আগামী দু’মাসের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারবো।
আকরামুল ইসলাম/আরএ/পিআর
Advertisement