নওগাঁর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানে ঈদের দিন থেকে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষদের উপস্থিতি বেড়েছে ব্যাপকহারে। বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বদলগাছীর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, হলুদ বিহার, ধামইরহাটের জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত আত্রাইয়ে কাছারি বাড়ি, মান্দার ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ, পত্নীতলায় দিবর দিঘী, সাপাহারের জবই বিল, নিয়ামতপুরের ছাতড়া বিল।
Advertisement
এছাড়া নওগাঁ শহরে অবস্থিত জেলা পরিষদ পার্ক, আব্দুল জলিল শিশু পার্ক, দিঘলীর বিল, ডানা পার্ক, বলিহার রাজবাড়ী উল্লেখযোগ্য। শিশু-কিশোর মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন মিলে ঘুরে ঘুরে ঈদ আনন্দ উপভোগ করেছে। এসব দর্শনীয় স্থানে পার্শবর্তী জেলা জয়পুরহাট ও বগুড়া থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণ-পিপাসুরা।
ঈদের দিন বিকেল থেকে নওগাঁ শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন আব্দুল জলিল শিশু পার্কে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। ঈদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিনোদনপ্রেমীরা ছুটে যান শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তির মোড় সংলগ্ন জেলা পরিষদ পার্কে। শহরের বুক চিরে বয়ে চলা ছোট যমুনা নদীর তীরে নির্মল বাতাস ও বিনোদনের জন্য অনেকে ভিড় জমান। সন্ধ্যার পর নদীর দু’ধারের আলোকসজ্জা মানুষের আনন্দকে যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান মান্দার ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের উপস্থিতি ছিল অন্য সময়ের তুলনায় বেশি। ভ্রমণ-পিপাসুরা পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রাচীন এই মসজিদটি ঘুরে দেখেন।
Advertisement
দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে আগামীর প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তুলতে ও নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে অনেকেই বন্ধু-বান্ধবকে নিয়ে ছুটে আসেন ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে। ঈদের দিন থেকে বিভিন্ন জেলার নানান বয়সী মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। সাধারণত বছরের অন্যান্য সময় এখানে যত পর্যটক আসেন, ঈদের ছুটিতে কয়েকগুন বেশি সমাগম ঘটে।
এছাড়া নওগাঁ শহরের বনানীন পাড়ার কামরুল হাসান চৌধুরী পরিবারসহ বেড়াতে এসেছেন আব্দুল জলিল শিশু পার্কে। বলেন, বাচ্চার স্কুল-কোচিংয়ের কারণে ঘোরাঘুরির তেমন সুযোগ হয় না। বাচ্চা বায়না ধরেছে পার্কে আসবে। শিশুদের বিনোদনের জন্য নওগাঁতে এই একটি মাত্র জায়গা। টিকিট কাউন্টারে প্রচুর ভিড়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভেতরে প্রবেশ করেছি। পার্কের মধ্যে রাইডগুলোতে চড়ে বাচ্চা অনেক আনন্দ উপভোগ করেছে। এটাই বড় পাওয়ায়।
মাইক্রোবাস ভাড়া করে বন্ধুরা মিলে পাহাড়পুর বৌদ্ধ-বিহারে এসেছেন সানোয়ার হোসেন। বলেন, ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করি। সারা বছরই বিভিন্ন জেলায় থাকতে হয়। বেড়ানোর তেমন সুযোগ পাওয়া যায় না। ঈদের ছুটিতে সব বন্ধুরা একত্রিত হয়। পাহাড়পুরে আসার পথে রাস্তায় ভাঙাচোরা আর খানাখন্দে ভরা যে অবস্থা ও ঝাঁকুনি তা বলে প্রকাশ করার মতো না। তারপর দর্শনীয় স্থানটি দেখে সবকিছু ভুলে গেছি। মোট কথা বন্ধুরা মিলে খুব আনন্দ করেছি।
এমআরএম
Advertisement