দেশজুড়ে

আম্রপালির নতুন রাজ্য খাগড়াছড়ি

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জকে আমের রাজধানী বলা হলেও আম্রপালি আমের রাজ্য হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শুরু করেছে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির সুমিষ্ট আম্রপালির পরিচিতি এখন দেশজুড়ে।

Advertisement

গত কয়েক বছরে এ জনপদে বাণিজ্যিকভাবে বেড়েছে সুমিষ্ট আম্রপালির চাষ। সমতলের জেলাগুলোতে আম্রপালির ব্যাপক চাহিদার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আম্রপালি খাগড়াছড়ি ছাড়িয়ে সমতলের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়ে থাকে।

খাগড়াছড়ির আম ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে চলতি সপ্তাহে বাজারে আসছে সুমিষ্ট আম্রপালি আম। এমনটাই জানিয়েয়েছেন বাগানচাষিরা। তাদের মতে পরিপক্ক আম বাজারে আনার লক্ষকে সামনে রেখেই কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে পাহাড়ের সুমিষ্ট আম্রপালি কিনতে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা খাগড়াছড়িতে এসেছে বলেও জানান বাগান মালিকরা।

স্থানীয় বাজারে ভালো মানের আম কেজি প্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, দ্বিতীয় ক্যাটাগরির আম ৭০ থেকে ৮০ টাকায় এবং শেষ দিকে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আম চাষিরা।

Advertisement

গত কয়েক বছরে ফল বিপর্যয়ের মুখে পড়া আম্রপালির এ বছর বাম্পার ফলনের কথা জানিয়েছেন আম চাষিরা। তাদের মতে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দুই গুণ বেশি আম উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন। আবহাওয়া অনকূলে থাকায় আম্রপালির হাসিতে হাসবেন খাগড়াছড়ির আম চাষিরা।

খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর খাগড়াছড়িতে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে আম্রপালির চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন আম্রপালির উৎপাদন হবে হবে আশা করা হচ্ছে। ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে প্রায় কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে বছর বৈরি আবহাওয়ার কারণে আমের উৎপাদন তলানিতে নেমে এসে। ওই বছর জেলার ২ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে আমের উৎপাদন হয় মাত্র ১৪ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন। ২০১৬ সালে ২ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে ২৭ হাজার ৩৪২ মেট্রিক টন, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৬০৯ হেক্টর জমিতে ২০ হাজার ৮৬ মেট্রিক টন।

বাণিজ্যিকভাবে আম চাষে সাফল্য পাওয়া খাগড়াছড়ির চাষি অনিমেষ চাকমা রিংকু জানান, তিনি জেলা সদরের তেতুলতলা এলাকায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে আম্রপালির চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি বছর তার বাগানে ৭০ থেকে ৮০ মেট্রিক টন আম পাওয়া যাবে বলেও মনে করছেন তিনি।

অন্যদিকে গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়ায় ৫ হেক্টর জমিতে আম্রপালির চাষ করেছেন মো. শাহাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর দিগুণ ফল হয়েছে।

Advertisement

তিনি বলেন, এ বছর কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে আম্রপালি। তার মতে আম্রপালি আম সুস্বাদু হওয়ায় ঢাকাসহ সারাদেশে এ আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

এ বছর আমের ভালো ফলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সফর উদ্দিন জানান, চলতি সপ্তাহ থেকে বাজারে আম্রপালি বিক্রি শুরু হবে। তিনি বলেন, পাহাড়ের মাটি এবং আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করেই এই প্রজাতির আম প্রচলন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমএএস/এমএস