জাতীয়

আ.লীগ নেতা ফরহাদ খুনের তিনদিনেও মামলা হয়নি

দুর্বৃত্তের গুলিতে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলী (৫৪) নিহত হওয়ার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি।

Advertisement

ওই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত তা নথিভুক্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম।

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, নিহতের পরিবারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের সঙ্গে কালও দেখা করেছি। তারা মামলা করবেন বলে জানালেও এখনও থানায় কেউ আসেননি। আজও (সোমবার) তারা মামলা না করলে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করবে।

এ ব্যাপারে বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী জাগো ননিউজকে বলেন, মামলার সব প্রস্তুতিই আমাদের সম্পন্ন কিন্তু নিহত ফরহাদেরর পরিবারের কেউ আসছেন না। আজ তাদের মামলা করার কথা আছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার আলীর মোড় এলাকার পূর্বাঞ্চল ১ নম্বর লেন সংলগ্ন বায়তুস সালাম জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন। নামাজ শেষে বেরিয়ে আসার পরই দুই জন দুর্বৃত্ত তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয় মুসুল্লিদের সহযোগিতায় তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে আসরের নামাজের পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাড্ডায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

মরদেহের সুরতহাল করা বাড্ডা থানার এসআই শহীদুল ইসলাম জানান, ফরহাদের ডান গাল, বাঁ চোখ বরাবর, মাথার ওপরে বাঁ দিক এবং ঘাড়ের বাঁ দিকে মোট চারটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

Advertisement

ঘটনার তদন্তকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাড্ডা এলাকার ডিশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদাবাজি, ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন চাঁদাবাজি ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন (৫০) খুন হয়ে থাকতে পারেন।

ডিবি উত্তরের এক কর্মকর্তা জানান, এলাকার ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ফরহাদের সঙ্গে একটি পক্ষের বৈরিতা চলে আসছিল। ডিএমপির গুলশান বিভাগের ডিসির কার্যালয়ে তার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে অভিযোগও ছিল। পরে এনিয়ে একাধিক বৈঠক হলেও ডিশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়া বন্ধ করেননি তিনি।

এছাড়া স্থানীয়ভাবে চলাচলকারী অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন থেকে প্রাপ্ত চাঁদার ভাগাভাগি নিয়েও তার সঙ্গে বিরোধীদের দ্বন্দ্ব ছিল। এসব কারণেই কোনো একটি পক্ষ তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারি কমিশনার মো. আশরাফুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, ফরহাদ হোসেনকে হত্যা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পালিয়ে যাবার সময় বাড্ডা-গুলশান লিংক রোডে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে বাঁধার শিকার হন খুনীরা। পুলিশ তল্লাশি করতে গেলে তাদের একজন এলোপাতাড়ি চারটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে অটোরিকশায় করে আবারও পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, দুজনই পেশাদার খুনী। পালিয়ে যাবার সময়কার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পর তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। খুনীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

জেইউ/এমএমজেড/জেআইএম