বাড্ডা এলাকার ডিশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদাবাজি, ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন চাঁদাবাজি ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন (৫০) খুন হয়েছেন বলে ধারণা পুলিশের।
Advertisement
তদন্তকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অন্য গ্রুপের সঙ্গে ফরহাদ হোসেনের দীর্ঘ দিন যাবত চাপা ক্ষোভ ও বৈরি সম্পর্ক চলছিল। তার একচ্ছত্র চাঁদাবাজি ও ডিশ ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ বন্ধেই ভাড়াটে খুনীদের ব্যবহার করা হয়।
বাড্ডা জোন পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে দু’জন পেশাদার খুনি অংশ নেয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় তল্লাশি চৌকিতেও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে তারা। সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে খুনীদের সনাক্ত করা গেছে।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার দুপুরে উত্তর বাড্ডার আলীর মোড় এলাকার পাশে পূর্বাঞ্চল ১ নম্বর লেন সংলগ্ন বায়তুস সালাম জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন ফরহাদ হোসেন। নামাজ শেষে বেরিয়ে আসার পরই দুই দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে তাকে।
Advertisement
ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে আসরের নামাজের পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাড্ডায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
মরদেহের সুরতহাল করা বাড্ডা থানার এসআই শহীদুল ইসলাম জানান, ফরহাদের ডান গাল, বাঁ চোখ বরাবর, মাথার ওপরে বাঁ দিক এবং ঘাড়ের বাঁ দিকে মোট চারটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফরহাদ বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করছে। ডিবি উত্তরের এক কর্মকর্তা জানান, এলাকার ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ফরহাদের সঙ্গে একটি পক্ষের বৈরিতা চলে আসছিল। ডিএমপির গুলশান বিভাগের ডিসির কার্যালয়ে তার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে অভিযোগও ছিল। পরে এনিয়ে একাধিক বৈঠক হলেও ডিশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়া বন্ধ করেননি তিনি।
Advertisement
এছাড়া স্থানীয়ভাবে চলাচলকারী অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন থেকে প্রাপ্ত চাঁদার ভাগাভাগি নিয়েও তার সঙ্গে বিরোধীদের দ্বন্দ্ব ছিল। এসব কারণেই কোনো একটি পক্ষ তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারি কমিশনার মো. আশরাফুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, ফরহাদ হোসেনকে হত্যা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পালিয়ে যাবার সময় বাড্ডা-গুলশান লিংক রোডে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে বাঁধার শিকার হন খুনীরা। পুলিশ তল্লাশি করতে গেলে তাদের একজন এলোপাতাড়ি চারটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে অটোরিকশায় করে আবারও পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, দুজনই পেশাদার খুনী। পালিয়ে যাবার সময়কার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পর তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি, প্রক্রিয়াধীন আছে। ব্যবসায়িক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বকে সামনে রেখে ফরহাদ খুনের ঘটনার তদন্ত চলছে।
জেইউ/এমএমজেড/জেআইএম