জাতীয়

অতিরিক্ত ভাড়ায় আজও ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনও বাড়ি ফিরছেন মানুষ। বিশেষ করে বাসে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাই বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায়ই টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষকে।

Advertisement

শনিবার দুপুরে সায়েদাবাদের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারী মিতালী পরিবহনের স্টাফ জহির হোসেন বলেন, ‘আজকেও অনেক যাত্রী। অনেকেই গতকাল শুক্রবার কাজকর্ম গুছাইতে পারে নাই, বিশেষ করে যারা ব্যবসা করেন। আবার শ্রমিকরা আছেন যারা কাজ শেষ করতে করতে রাত হইয়া গেছিল, তারাই আইজ যাইতাছে।’

সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে বাস কাউন্টারগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মো. শরীফ হোসেন। তিনি কাঁঠালবাগানে হোটেলের ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি হবিগঞ্জের লাহাই থানায়। এখান থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড যাব। কর্মচারীদের ঈদের সব পাওনা মিটিয়ে বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় গতকাল যেতে পারিনি। তাই আজ ঈদের নামাজ পড়েই রওনা দিয়েছি। স্ত্রী ও সন্তানরা গ্রামেই থাকে।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘সায়েদাবাদ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড ভাড়া ২৫০-৩৫০ টাকা হলেও কয়েকটি কাউন্টার ঘুরলাম ভাড়া চাচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা।’

জনপথ মোড়েই কয়েকটি ব্যাগ, স্ত্রী ও দুই বাচ্চা নিয়ে বাসের অপেক্ষা করছেন চাঁন মিয়া। তিনি পিরোজপুর যাবেন। চাঁন মিয়া বলেন, ‘আমি গতকালই ফ্রি হয়েছি। কিন্তু ভিড়ের কথা চিন্তা করে বউ-বাচ্চা নিয়ে যাওয়ার সাহস পাইনি। আজ সকালে ঈদের নামাজ পড়েই রওনা হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি ইমাদ পরিবহনে যাব। অন্যান্য সময়ে ভাড়া ৩৫০-৪০০ টাকা হলেও ৫০০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটেছি।’

হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার মোতালেব বলেন, ‘খুব বেশি চাপ না থাকলেও আজও যাত্রী রয়েছে।’

Advertisement

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাড়ার চার্ট আছে। চার্টের বাইরে আমরা কোনো ভাড়া নেই না।’

বিভিন্ন বাস কোম্পানি খুলনার ভাড়া ৫০০ টাকা নিচ্ছে। অন্যান্য সময় এ রুটে ৩৫০ টাকা ভাড়া নেয়া হয় বলে জানান যাত্রীরা।

এশিয়া পরিবহনে মাইজদী যাবেন রং মিস্ত্রী মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সময় ৩২০ টাকা দিয়ে যাই, আজ (সোমবার) টিকিট কিনলাম ৫০০ টাকা দিয়ে।’

ঢাকা থেকে সড়ক পথে সিলেট যেতে সাধারণ বাসের ভাড়া ৩৫০ টাকা। বাস কোম্পানিগুলো ভাড়া ৪০০-৫৫০ টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। ঢাকা-রায়পুর-নোয়াখালী রুটে চেয়ার কোচের ভাড়া ৩২০ টাকা। ঈদের দিন এই ভাড়া ৫০০ টাকা নেয়া হচ্ছে।

ঢাকা-দাউদকান্দি ও ঢাকা-নরসিংদী রুটে বাসভেদে ভাড়া ৫০-৭০ টাকা। কিন্তু সায়দাবাদ বাস স্টেশনে এ ভাড়া রাখা হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা।

ঢাকা থেকে রাজশাহীর ভাড়া ৪০০ টাকা হলেও ৫০০ টাকার নিচে কোনো টিকিট কাটা হচ্ছে না সায়দাবাদে। ঢাকা থেকে বরগুনা রুটের জনপ্রতি ভাড়া ৪০০ টাকা হলেও সোমবার প্রতি টিকিটের জন্য ১০০-১৫০ টাকা অতিরিক্ত রাখা হচ্ছে।

সায়দাবাদে একুশে, ইউনিক, আল-মোবারাকা, দোলা, বিলাস, ঈগল, ইকনো, তিশা, গ্রামীণ, জোনাকী, মিতালী, শ্যামলী, সাকুরা, মামুন পরিবহনসহ বিভিন্ন বাস কোম্পানিগুলোকে যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।

আরএমএম/জেএইচ/পিআর