গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ফুঁসে উঠেছে মনু নদী। গত ১১ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ পানির রেকর্ড করা হয়েছে। মৌলভীবাজার শহর রক্ষা বাঁধের অন্তত ২০ জায়গা দিয়ে পানি ছুইয়ে ছুইয়ে সেন্টার রোড দিয়ে শহরে ঢুকছে। আরেকটু পানি বাড়লেই প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে পানি ঢুকবে শহরে।
Advertisement
যে কোনো সময় মৌলভীবাজার শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে তাই সবাইকে সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী পার্থ।
ইতোমধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। শহরেরজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সাইফুর রহমান রোডের যান চলাচল। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
প্রতিরক্ষা বাঁধের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার শাহ জালাল ও পৌর মেয়র ফজল রহমান সহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ।
Advertisement
সরজমিনে দেখা গেছে, পুরাতন থানার সামনে থেকে পশ্চিমবাজার মোড় পর্যন্ত অন্তত ২০টি স্থান দিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধের পাশে এবং উপরে থাকা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতর এবং পাশ দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে পানি ঢুকছে শহরে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মৌলভীবাজার শহরের পাশে চাঁদনী ঘাট পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা গত রাতে ছিল ১১৩ সেন্টিমিটার। অপর দিকে ধলই নদীর পানি বিপদ সীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের পানি যত নামবে পানি তত বাড়বে।
ব্যবসায়ী নেতা ডা. আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, মৌলভীবাজার শহর অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। শহর প্রতিরক্ষা ওয়াল দিয়ে পানি প্রবেশ করছে শহরে। পানি আরেকটু বাড়লে ৮৪ সনের প্রলয়ঙ্কারী বন্যার চাইতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে।
সাইফুর রহমান রোডের খেয়াঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মানিক লাল জানান, দুদিন ধরেই পানি ঢুকছে কিন্তু আজ সকাল থেকে তার বেগ ৩ গুণ বেড়ে গেছে।
Advertisement
অপর দিকে মনু ও ধলাই এর বিভিন্ন ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্রায় শতাধিক গ্রামের পানি কাল কিছুটা কমার পর আজ সকাল থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পুরোপুরি তলিয়ে গেছে কমলগঞ্জের পতন উষার ইউনিয়নের ও কুলাউড়ার শরিফপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ।
এদিকে কালভাট ভেঙে ও পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক গুলো কাঁচা-পাকা সড়ক। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে বন্ধ রয়ছে চাতলাপুর স্থলবন্দরের কার্যক্রম। দুই পাড়ে আটকা পড়েছেন বহু বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিক।
হঠাৎ করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আটকা পড়া মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, অবস্থা ভালো না। যেকোকো মুহূর্তে শহরে পানি ঢুকতে পারে। সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।
রিপন দে/এমএএস/পিআর