ফিফা প্রেসিডেন্ট ইনফানতিনোকে মাঝে বসিয়ে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আসন পেতেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আল সাউদ। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বহমান মস্কোভা নদীর স্রোতের কলকল শব্দ হয়তো কানে পৌঁছেনি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে রাশিয়ার প্রতিপক্ষ সৌদি যুবরাজের। কিন্তু লুঝনিকি স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি আসনটি যেন ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মোহাম্মদ কিন সালমানের কাছে।
Advertisement
পুতিন মুচকি হেসেছেন। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে তার দেশের এমন নৈপুণ্য যে সব প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। এইতো সপ্তাহখানেক আগে এক অনুষ্ঠানে ভ্লাদিমির পুতিন খেলোয়াড়দের আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশের জন্য ভালো খেলতে। আগের দিন সমালোচলার ঝুলি কাঁধে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভালো খেলার প্রত্যাশার গান শুনিয়েছিলেন স্বাগতিকদের কোচ স্তানিস্লাভ চেরেসভ। পুতিন কেন দলের কোচও হয়তো ভাবেননি উদ্বোধনী ম্যাচটা এভাবে আলোয় ভরে দেভে দেশটির ফুটবলাররা।
দুইদিন আগে জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে রাশিয়ানরা। রাজধানী মস্কোর রেডস্কয়ার উৎসবমুখর ছিল জাতীয় দিবস আর বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের সমর্থকদের আনন্দ-উল্লাসে। বৃহস্পতিবার লুঝনিকি স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরে দিতে কোনো কার্পণ্য করেনি স্বাগতিক দর্শকরা। আর লেভ ইয়াসিনের উত্তরসূরীরাও দর্শকদের দিয়েছেন মুঠোভরে।
উদ্বোধনী ম্যাচের আগে চারিদিক থেকে সমালোচনার তীর এসেছে স্বাগতিকদের কোচের দিকে। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সে সমালোচনার কোনো জবাব দেনটি চেরেসভ। এমন কী পাত্তাও দেননি। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এতটুকই বলেছিলেন, ‘সমালোচনা তাদের জন্য ইতিবাচক কিছু এনে দিতে পারে।’ দল ৫-০ গোলে জেতার পর রাশিয়ান কোচের অঙ্গভঙ্গিই বলে দিয়েছে সমালোচনার জবাবটা কীভাবে দিলেন তার শিষ্যরা।
Advertisement
রাশিয়া যখন গুনে গুনে গোল দিচ্ছিল সৌদির জালে তখন বেরসিক টিভি ক্যামেরা বারবার ক্লোজ করে দেখিয়েছে অতিথির আসনে বসা উদ্বোধনী ম্যাচের দিন বড় মুখ ফিফা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও সৌদি যুবরাজের মুখ। যদি পারতেন তাহলে নিশ্চয়ই আসন ছেড়ে চলে যেতেন এশিয়ার দেশ সৌদি আরবের যুবরাজ। পারলে হয়তো মুখও লুকাতেন তিনি। নিজের দলের এভাবে লাল ঢেউয়ে ভেসে যাওয়াটা নিশ্চয়ই কল্পনায় আনেননি তিনি।
বিশ্বকাপে ভালো করার প্রত্যাশায় গত বছর আর্জেন্টাইন হুয়ান অ্যান্থনি পিজ্জিকে জাতীয় দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছিল সৌদি আরব। বুধবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়াকে সমীহ করেই অঘটনের প্রত্যাশার কথা বলেছিলেন ৫০ বছর বয়সী এ অভিজ্ঞ কোচ। লুঝনিকি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস থাকবে জানতেন সৌদি কোচ। সে উচ্ছ্বাস তিনি স্তব্ধ করে দেয়ার গানও শুনিয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সমর্থকদের। গ্যালারি স্তব্ধ করতে পারেনি সৌদির ফুটবলাররা। উল্টো ডাগআউটে দাঁড়িয়ে নিজের চুল ছিড়েছেন তাদের থিঙ্কট্যাংক।
আরআই/বিএ
Advertisement