ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন। গতবছর ঈদের এক সপ্তাহ আগেও যানজটে নাকাল ছিল মহাসড়কটি।
Advertisement
এবারও মহাসড়কটিতে তীব্র যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু এবার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত ও নবনির্মিত সবগুলো সেতু খুলে দেয়ায় মহাসড়কের চিত্রটাই পাল্টে গেছে।
বুধবার দুপুরে মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে যানজটের কোনো চিত্র চোখে পড়েনি। ফলে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না ঘরমুখো মানুষের।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, এলেঙ্গা থেকে মির্জাপুরের পাকুল্লা পর্যন্ত কোথাও গাড়ি চলাচল থেমে নেই। স্বাভাবিকভাবেই মহাসড়কে চার লেনের সুবিধা নিয়ে যান চলাচল করছে।
Advertisement
দুপুরে সদর উপজেলার ঘারিন্দা এলাকায় একটি দুর্ঘটনার কারণে একটু যানজটের সৃষ্টি হলেও ১৫ মিনিটের মধ্যেই দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ফোর লেনের কাজ দেখতে এসে ফোর লেন খুলে দেয়ার কথা বলেন সেতুমন্ত্রী। তবে বড় প্রকল্প হওয়ায় তৈরি হয়েছে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা।
জানা গেছে, ঠিকারদারি প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার সময় বাড়িয়েও নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ২৬টি ব্রিজ, ৬০টি কালভার্ট, ৩টি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস ও রেল ওভারপাস। ইতোমধ্যে ২৬টি ব্রিজের মধ্যে ২৪ ব্রিজ, ৬০টি কালভার্টের মধ্যে ৫২টি কালভার্টের কাজ শেষ হয়েছে। ৩টি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটির কাজ চলমান অপর দুটি ঈদের পরে কাজ শুরু হবে। অন্যদিকে ১০টি আন্ডারপাস ও রেল ওভারপাসের মতো বড় বড় অবকাঠামোর মধ্যে চারটির কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে, ফোর লেন সড়কের অনেকাংশ দৃশ্যমান হলেও সড়কের বড় একটি অংশের কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ঈদ যাত্রায় পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত নয় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভোগান্তিমুক্ত ঈদযাত্রার আশ্বাস দেয়া হলেও প্রতিবন্ধকতার কারণে কিছুটা যানজটের শঙ্কা ছিল। তবে আজ বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট চোখে পড়েনি।
Advertisement
গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি একেএম কাউসার বলেন, মঙ্গলবার থেকে ফোর লেনের কিছু অংশ ও কয়েকটি ব্রিজ খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে বুধবার বিকেল পর্যন্ত মহাসড়ক ছিল যানজটমুক্ত।
মির্জাপুর বাইপাস থেকে মহাসড়কের সোহাগপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়ক যাজটমুক্ত রাখতে মহাসড়কের দুই পাশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। সেই সঙ্গে ধেরুয়া, সোহাগপাড়া জামতলা, মির্জাপুর বাইপাস, চড়পাড়া এলাকায় মাইকিং করে চালক ও যাত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে।
ফোর লেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জিকরুল হাসান জানান, চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার মহাসড়কের ফোর লেন প্রকল্পটিতে ফোর লেন ছাড়াও ২৬টি ব্রিজ, ৬০টি কালভার্ট, ৮টি ফ্লাইওভার, ২টি রেল ফ্লাইওভার ও ১৩টি আন্ডার পাস রয়েছে। এই কাজের প্রায় ৬৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মন্ত্রীর নির্দেশে ফোর লেন খুলে দেয়া হয়েছে। তাই যানজট নেই।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, যানজটমুক্ত ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসড়কটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করে পৃথক পৃথক টিম গঠন করা হয়েছে। নিয়মিত এক হাজার পুলিশ সদস্য চার গ্রুপে ভাগ হয়ে মাঠে থাকবেন।
এস এম এরশাদ/এএম/জেআইএম