দেশজুড়ে

খাতুনগঞ্জেও পানি, ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। জলাবদ্ধতায় বিপাকে পড়েছেন পাশের চাক্তাই ও আসাদগঞ্জের ব্যবসায়ীরাও। মঙ্গলবার ভোর থেকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদামে পানি ওঠায় অনেক খাদ্যদ্রব্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই এবারও ক্ষতির আশঙ্কায় আতঙ্কে আছেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল রাত থেকে ঢলের পানি ঢুকতে শুরু করে দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জে। মঙ্গলবার ভোরে দুটি বাজারের বিভিন্ন আড়ত ও দোকানে ঢুকে পড়ে পানি। সেখানে মজুদ রাখা বিভিন্ন পণ্য পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, খাল-নালা পরিষ্কার না করায় কর্ণফুলী নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ দুঃসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ভোগ্যপণ্যের আরতদার জামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে যাদের খাদ্যদ্রব্যের দোকান বা গুদাম রয়েছে, তাদের অনেকের গুদামে পানি ঢুকেছে। কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। কর্ণফুলী নদী ও চাক্তাই, বদরখালে ড্রেজিং ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বলেন, ‘দু’দিন ধরে পানি বাড়ছে। মালামাল নষ্ট হচ্ছে। আবার খরিদ্দার পাওয়া যাচ্ছে না।’

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে জোয়ারের পানি ও জলাবদ্ধতা ঠেকানো যাচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জোয়ারের পানি কিন্তু চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করত না। এখন প্রবেশ করছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। এতে নদ-নদী উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। কর্ণফুলী নদী, চাক্তাই খালসহ আশপাশের নদীগুলোর ড্রেজিং ব্যবস্থা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে নাব্যতাও কমে গেছে। এ কারণে যখন জোয়ার আসে, তখন পানি নদী থেকে উপচে ড্রেনগুলো দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। এ কারণে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পরিষ্কার না করার কারণে এবং পাহাড়ের পলি এসে পানি চলাচলের এসব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।’

খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সগির আহম্মদ বলেন, ‘গত বছরের মতো এ বছরও পানি বাড়ছে। এভাবে প্রতিনিয়ত যদি পানি বাড়তে থাকে এবং প্রতিবছর যদি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে খাতুনগঞ্জের মতো অতি প্রাচীন বাণিজ্যনগরী ধ্বংস হয়ে যাবে। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে যাবে। এ জন্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

জোয়ারের পানি ও নগরীর জলাবদ্ধতা ঠেকাতে নিয়মিত কর্ণফুলী নদী ড্রেজিং, চাক্তাই ও বদর খাল খনন, কর্ণফুলী নদীর মোহনায় স্লুইসগেট স্থাপন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ, দখল হয়ে যাওয়া খাল উদ্ধার ও সংস্কারের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

আবু আজাদ/বিএ

Advertisement