অর্থনীতি

ঈদের পর ভালো পুঁজিবাজারের প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের

রমজানে দেশের শেয়ারবাজার দরপতনের মধ্যে থাকলেও ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে বড় উত্থানের দেখা মিলেছে। শেয়ারবাজারের এই ঊর্ধ্বমুখিতা ঈদের পরেও অব্যাহত থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।

Advertisement

শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা দরপতনে শেয়ারবাজারের সূচক যেভাবে পড়েছে, তাতে যে কোনো সময় ঘুরে দাঁড়ানোই স্বাভাবিক বিষয়। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে যে দরপতন হয়েছে তার যুক্তি সঙ্গত কোনো কারণ নেই।

ঈদের পরে কেমন শেয়ারবাজার প্রত্যাশা করছেন এমন প্রশ্ন করা হলে বিনিয়োগকারী ইব্রাহিম বলেন, ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে তো মোটামুটি বড় উত্থানই হলো। আশা করি, ঈদের পর এই ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, রমজানে বাজার মন্দার মধ্য দিয়ে গেছে। প্রায় সব কোম্পানির দাম কমেছে। যে দরপতন হয়েছে তাতে বিনিয়োগ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ঈদের পর শেয়ারের দাম না বাড়লে পথে বসার উপক্রম হবে।

Advertisement

আর এক বিনিয়োগকারী আজগর বলেন, ২০১০ সালের দরপতনেই বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে যে নিরব দরপতন হয়েছে তাতে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হওয়ার পথে আমার পোর্টফোলিও দেখলেই তা বুঝতে পারবেন। যে কয়টি কোম্পানির শেয়ার আমার কাছে সব কটির দাম কমেছে। সব থেকে কম দাম কমেছে যে কোম্পানিটির শেয়ারের তারও ২০ শতাংশ নেই।

তিনি বলেন, এভাবে দরপতনের পরও হতাশ হয়নি। আশায় আছি, ঈদের পর বাজার ভালো হবে। লোকসানও কাটিয়ে উঠতে পারব এমন প্রত্যাশা করছি। এখন দেখা যাক ঈদের পরে লেনদেন শুরু হলে বাজার কেমন আচরণ করে। বাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা না ফিরলে নিশ্চিত পথে বসতে হবে।

জামিল নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজেটে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানির কর্পোরেট করে ছাড় দিয়েছে। বাজারে গুঞ্জন আছে এতে এই খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা বাড়বে। যার ইতিবাচক প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়বে।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাব দেয়ার পর তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দু'দিন প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে মূল্যসূচকও বেড়েছে। কর্পোরেট করে ছাড় দেয়ার কারণেই বাজারে এমন ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

Advertisement

শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজারে যে দরপতন হয়েছে তার যুক্তি সঙ্গত কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় ঈদ কেন্দ্রিক কিছুটা বিক্রির চাপ থাকায় এ দরপতন হতে পারে। এর সঙ্গে নির্বাচনী বছর হওয়ায় কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। এসবের নেতিবাচক প্রভাব হয় তো বাজারে পড়েছে। তারপরও এমন দরপতন হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না। এখন বাজার যে অবস্থায় আছে, তাতে যে কোনো মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানোটাই স্বাভাবিক।

বিএসইসির সাবেক আর এক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ব্যাংক, বীমা ও অার্থিক কোম্পানির কর্পোরেট করে ছাড় দেয়ায় শেয়ারবাজার কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে খুব বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।

এমএএস/জেএইচ/এমএস