পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে বিআইডব্লিউটিসিসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। কিন্তু এবার লম্বা ছুটি না থাকায় ঈদের দু’দিন আগে যানবাহনের বাড়তি চাপে ঘাটে যানজটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির শঙ্কা কাটছে না।
Advertisement
বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম রুট পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট। গুরুত্বপূর্ণ এই নৌ-রুট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে ৩ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। কিন্তু ঈদের সময় এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দুই থেকে তিনগুন। গত ঈদুল-ফিতরের সময় একদিনে ৭ হাজার গাড়ি পারাপারের রেকর্ড রয়েছে এই ঘাটে।
এ জন্য ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় বাড়তি প্রস্তুতি। এবারো ঘাট সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে একাধিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তুত হচ্ছে ঘাট।
বিআইডব্লিউটিসির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে এবার ৯টি রো-রোসহ মোট ১৯টি ফেরি যানবাহন পারাপারে নিয়োজিত থাকবে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে নিরাপদেই যাত্রীদের পারাপার করা সম্ভব।
Advertisement
তবে এবার ঈদের ছুটি কম হওয়ায় বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১৪ ও ১৫ জুন) ঘাটে যানবাহনের বাড়তি চাপ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে ঘাটে দীর্ঘ যানজটেরও আশঙ্কার কথা জানান বিআইডব্লিউটিসির এ কর্মকর্তা।
মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার রিফাত হোসেন শামীম জানান, যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে এবারও ঈদের তিনদিন আগে থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। হকার ও রিকশাভ্যান মুক্ত থাকবে ফেরি ঘাট এলাকা। যাত্রী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ শতাধিক সদস্য। প্রথমবারের মতো পুরো ঘাট এলাকা নিয়ন্ত্রণে বসছে সিসি ক্যামেরাও।
তিনি আরও বলেন, এবার টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও মাওয়া রুটের বিভিন্ন স্থানে বেহালদশা থাকায় ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করবে। এ কারণে বিগত সময়ের চেয়ে ছোট গাড়ির চাপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঘাটের যানবাহন সুশৃঙ্খল রাখাসহ যাত্রী নিরাপত্তায় তাদের ব্যাপক প্রস্তুতি আছে।
জেলা প্রশাসক নাজমুছ সাদাত সেলিম জানান, ঈদের সময় ঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। যেকোনো অপরাধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন অদালত। এছাড়া যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসায় মেডিকেল ক্যাম্প, রাস্তার পাশে শৌচাগার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রশাসনের প্রস্ততিগুলো বাস্তবায়নে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
Advertisement
এদিকে প্রশাসনের এ সকল প্রস্তুতিতে সন্তোষ জানিয়েছেন পরিবহন চালক ও যাত্রীরা। তাদের দাবি, সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/জেআইএম