খেলাধুলা

মেসিদের অনুশীলনে টিকিটের জন্য হাহাকার, ক্ষোভ

মস্কোর কোতেলনিকি মেট্রো স্টেশন থেকে বের হয়ে বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে। এমন সময় এক কিশোর জানতে চাইলো- আমি কোন দেশের। দেশ এবং নিজের পরিচয় দিতেই ইগোর নামের ওই কিশোরের পাল্টা প্রশ্ন- মেসিদের অনুশীলন দেখতে যাচ্ছি কি-না? 'হ্যাঁ' বলতেই ইশারায় আরও কয়েকজনকে ডেকে এনে বললো- আমরা সবাই মেসিদের অনুশীলন দেখতে যাচ্ছি।

Advertisement

কোতেলনিকি মেট্রো স্টেশন থেকে বাসে এক ঘণ্টার পথ ব্রোনিৎসি জেলা শহর। বাস থেকে নেমে ২০ মিনিটের মতো পায়ে হাঁটা। তারপর পাওয়া গেলো মেসিদের বেসক্যাম্প। সাইজুনেক্সি স্পোর্টস স্কুলের পুরো ক্যাম্পাস যেন মেসিদের বাড়িঘর। আর্জেন্টিনার পতাকা, মেসিদের বড় বড় ছবি। পুরো স্কুলটাই করে তোলা হয়েছে মেসিময়।

বাস থেকে নেমে মেসিদের বেসক্যাম্প পরিদর্শন থেকে শুরু করে আবার মস্কো ফেরা পর্যন্ত কাকতালীয়ভাবে ওই ইগোররাই সফরসঙ্গী। মস্কোর একটি স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র ওরা। দল বেঁধে তারা গিয়েছিল মেসিদের অনুশীলন দেখতে।

অনুশীলন শেষে ভক্তদের অটোগ্রাফ দিয়েছেন মেসি। ইগোরদের দলের একমাত্র ভাগ্যবান সে-ই। মস্কো বাসস্ট্যান্ডে নেমেই সবাইকে হাতের টিকিটটি দেখাচ্ছিলেন ইগোর। টিকিটের গায়ে মেসির অটোগ্রাফ। যেন স্বর্গ খুুঁজে পেয়েছেন মস্কোর এই কিশোর।

Advertisement

মেসিরা যেখানে বেসক্যাম্প করেছেন নৈস্বর্গিক ভূমি বলা যায় ওই জায়গাটাকে। বিশাল লেক। দুই পাশে বনাঞ্চল। সবুজে ঘেরা এক পরিবেশই মেসিরা বেছে নিয়েছেন বিশ্বকাপ অনুশীলনের জন্য।

বাস থেকে নেমে ২০ মিনিটের দূরত্বের স্কুল মাঠে যাওয়ার সময় পার হতে হয়েছে তিনটি নিরাপত্তা বেষ্টনী। প্রতিটি চেকপোস্টেই শতশত দর্শকের ভিড়। সবাই মেসিদের অনুশীলন দেখতে চান। কিন্তু সবার তো দেখা হবে না। অনুশীলন দেখার টিকিট তো থাকতে হবে।

টিকিট নিয়ে ছিল হাহাকার। আর্জেন্টিনার মিডিয়া ম্যানেজারের হাতে ছিল সব টিকিট। তিনি তার ইচ্ছে মতো নিজেদের দেশের দর্শক ও মিডিয়াকর্মীদের টিকিট দিয়ে অনুশীলন মাঠে নিয়েছেন। এ নিয়ে রাশিয়ান মিডিয়ার সঙ্গে প্রচণ্ড কথা কাটাকাটিও হয়েছে নিরাপত্তা কর্মীদের। টিকিট না পেয়ে দর্শকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

যাদের মহামূল্যবান টিকিট ছিল, তারা অনুশীলন মাঠের পাশে থেকে গেছেন। যাদের টিকিট নেই তারা কি দ্রুত ঘরমুখো যাত্রী? না । মেসিদের অনুশীলন দেখতে গেছেন। দেখা হয়নি। কিন্তু মেসিদের কয়েকশ গজের মধ্যে থাকতে পারাটাই কি কম তৃপ্তির? এটা মনে করেই প্রথম নিরাপত্তা চৌকির সামনে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিল অনেক দর্শক। মেসিরা তখন অনুশীলন শেষ করে রুমে ফিরে গেছেন। কিন্তু দর্শকরা যেন ঘরমুখো হতে চাচ্ছিলেন না। হয়তো মেসি-মেসি একটা ঘ্রাণই উপভোগ করছিলেন তারা। চোখে দেখতে পারেননি, তাতে কি?

Advertisement

আরআই/এমএমআর/জেআইএম