চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে নবজাতক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন ও সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১ জুলাই তাদের স্ব-শরীরে হাজির হয়ে এর কারণ ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।
Advertisement
আগামী চারসপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি অথবা সেক্রেটারিসহ সংশ্লিষ্ট ৯ জনকে উক্ত রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি সহিদুল করিমের আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আদালত তলবের আদেশের পাশাপাশি সন্তান প্রসবকারী মরিয়ম বেগমকে চিকিৎসা দিতে এবং নবজাতকের জীবন রক্ষায় তাদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই নারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে ডাক্তার ও নার্সকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
Advertisement
মনজিল মোরসেদ জানান, গত ৯ মে বুধবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাত ১১টায় মরিয়ম বেগম (২৬) নামের এক গর্ভবতী নারী সন্তান প্রসবের মুহূর্তে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
পরে এ ঘটনাটি বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হয়। পত্রিকার ওই সব প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ গতকাল রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ এ আদেশ দেন।
পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় অমানবিক ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় প্রসূতি মা মরিয়মকে বেসরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাকে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়ার পর মোটামুটি সুস্থ আছেন তিনি। তবে তার সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
ওই প্রসূতি মায়ের স্বজনদের অভিযোগ, গত বুধবার রাত ১০টায় প্রচণ্ড প্রসব বেদনা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান মরিয়ম বেগম। ওই সময় ব্যথায় কাতর মরিয়ম ছটফট করছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন তাকে দেখার পর হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে পাঠান। কিন্তু নার্স ছায়া চৌধুরী কোনো কথা না শুনেই এই প্রসূতি মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে জোর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন মরিয়ম বেগমকে।
Advertisement
এফএইচ/জেএইচ/এমএস