বাবা মির্জা গোলাম রসুল বীর মুক্তিযোদ্ধা। খুলনা শিল্পকলা একাডেমিতে দুই যুগের বেশি সময় ধরে সংগীতের শিক্ষকতা করছেন। দেশের অনেক বড় শিল্পী তার কাছ থেকে সংগীতের দীক্ষা গ্রহণ করেছেন। সেই বাবার কাছ থেকেই গানে হাতে খড়ি নিয়েছেন রেশমী। পুরো নাম রেশমী মির্জা। জন্ম ও বেড়ে উঠা খুলনায়। ২০১১ সালে প্রাণ পাওয়ার ভয়েসের শিল্পী হিসেবে মিডিয়ায় যাত্রা। তারপর থেকে গান করছেন নিয়মিতই। আলোচনায় এসেছেন ‘নিন্দুকের মুখে’ শিরোনামের একটি গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করে। পাশাপাশি গেল রোজা ঈদে বাজারে এসেছে তার একক অ্যালবাম ‘রেশমী ও মাটি’। সম্প্রতি ব্যস্ততার ফাঁকে এই তরুণ তুর্কী ঘুরে গেলেন জাগো নিউজের কার্যালয়ে। আলাপকালে জানালেন গান নিয়ে নিজের ভালো লাগা ও পথচলার কথা। সঙ্গে ছিলেন লিমন আহমেদজাগো নিউজ : কেমন আছেন?রেশমী : খুব ভালো। নতুন কাজগুলোর প্রচার প্রসারে দারুণ কেটে যাচ্ছে সময়গুলো। জাগো নিউজ : আপনার মিউজিক ভিডিওটি বেশ আলোচনায় এসেছে। এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইরেশমী : নিন্দুকের মুখে গানটি ২০১৪ সালে ‘পাওয়ার প্রজেক্ট’ নামে মিক্সড অ্যালবামে প্রকাশ পায়। অ্যালবামে পাওয়ার অফ ভয়েসের সের এগারোজনের গান ঠাঁই পেয়েছিলো। আমি সেই তালিকায় নবম ছিলাম। আমার নিজের গানটি নিজের কাছে খুব ভালো লেগেছিলো। কাছের মানুষরাও বলছিলেন বেশ হয়েছে গানটি। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই মিউজিক ভিডিও করার সিদ্ধান্ত নেই। ভিডিওটি তৈরি করেছেন ইয়ামিন এলান। আর গানটির সুর-সংগীত করেছিলেন আমার খুব পছন্দের গানের মানুষ সোলস ব্যান্ডের সদস্য মীর মাসুম ভাই। গানটির গীতিকার ছিলেন আমার আরেকজন প্রিয় মানুষ ইফতেখার সুজন ভাই। ভিডিওটি নিয়ে আমি দারুণ সাড়া পেয়েছি। এতটা আমার ভাবনাতেও ছিলো না। শ্রোতা-দর্শকদের ধন্যবাদ। তাদের এই সমর্থন আমাকে প্রেরণা দিয়েছে।জাগো নিউজ : এবার আপনার প্রথম একক অ্যালবাম সম্পর্কে বলুনরেশমী : মীর মাসুদ ভাইকে নিয়ে আমি একটি ব্যান্ড তৈরি করেছি ‘রেশমী এন্ড মাটি’ নামে। সেই নামেই প্রকাশ পেয়েছে আমার প্রথম একক অ্যালবাম। এখানে মোট আটটি গান শুনতে পাবেন শ্রোতারা। তারমধ্যে ‘উল্টো পথে’ শিরোনামের একটি গানে আমার সাথে কণ্ঠ দিয়েছেন স্বনামধন্য বাউল শিল্পী শফি মণ্ডল। বাকি গানগুলো আমি একাই গেয়েছি। এখানে ফোঁক, মেলোডিয়াস, দেশপ্রেম, ভাবতত্ত্ব, প্রেম- ভিন্ন ধরণের গান রয়েছে। গানগুলো লিখেছেন ইফতেখার সুজন, রবিউল ইসলাম জীবন ও গোলাম কবির রনি। অ্যালবামটিতে সুরারোপ ও সংগীতায়োজন করেছেন মীর মাসুম। বাজিয়েছেন আমার ব্যান্ডের সদস্যরা।জাগো নিউজ : এত পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থাকতে নতুন মিউজিক লেবেল থেকে কেন আপনার অ্যালবাম বের করলেন?রেশমী : অ্যালবাম বের করার অভিজ্ঞতা আমার নিজের খুব নেই। কিন্তু জেনেছি যে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো অ্যালবাম প্রকাশ করে প্রচারে অনেক অনিয়ম করে। এমনকী সারা দেশব্যাপি অ্যালবাম পৌঁছে দেয়ার কথা বললেও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি নতুন লেবেল ‘আম্বার রেকর্ড’ থেকে অ্যালবাম প্রকাশ করার। জাগো নিউজ : এখন পর্যন্ত কেমন সাড়া পাচ্ছেন অ্যালবামটির জন্য? রেশমী : খুব তো বেশিদিন হয়নি অ্যালবাম বাজারে বেরিয়েছে। তবু যেটুকু সাড়া পেয়েছি তাতে আমি অভিভূত এবং আমার গান করা নিয়ে অনুপ্রাণীত। এরইমধ্যে গানগুলো এফএম রেডিওতে বাজতে শুরু করেছে। গান বাংলা চ্যানেলে লাইভ অনুষ্ঠানে এই অ্যালবামের গানগুলো করে বেশ প্রশংসা পেয়েছি। জাগো নিউজ : একজন নতুন শিল্পী হিসেবে সমসাময়িক গান নিয়ে আপনার ভাবনা কী?রেশমী : আজকাল গানের মান ও প্রাণ নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। তবে আমার চোখে এখন প্রচুর গান হচ্ছে এটাই বড় কথা, গানের জন্য সুখের কথা। শুধু খারাপ কিছু হয় না, সাথে ভালোও থাকে। অনেকেই ভালো গান করছেন। নইলে এই ইন্ড্রাষ্ট্রিটা চলছে কী করে।জাগো নিউজ : গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?রেশমী : বাবার হাত ধরে সেই ছোটবেলা থেকেই গান শিখেছি একদিন অনেক বড় শিল্পী হওয়ার বাসনা নিয়ে। কতো শিল্পীকে দেখেছি আমার বাবার কাছে গান শিখেছেন, নাম করেছেন। আমার বড় বোনেরও দারুণ গলা। উনার গান গাওয়াই মূলত আমাকে গানে ঝুঁকতে আগ্রহী করেছে। সেই ছোটবেলা থেকেই মঞ্চে মঞ্চে গান গেয়ে বেড়িয়েছি। পাওয়ার ভয়েসের সুবাদে দেশের বাইরেও গান করার সৌভাগ্য হয়েছে। একটি মিক্সড অ্যালবাম ও একক অ্যালবামে কাজ করেছি। সেই ধারাবাহিকতায় গান করে যেতে চাই। নিজেকে মাটি ও মানুষের শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। দোয়া করবেন আমার জন্য।জাগো নিউজ : অবশ্যই। আপনার জন্য শুভকামনা। ধন্যবাদ সময় করে জাগো নিউজ কার্যালয়ে আসার জন্যরেশমী : আপনাকেও ধন্যবাদ। দেখুন রেশমীর নিন্দুকের মুখে গানের ভিডিও আরএএইচ/এলএ/আরআইপি
Advertisement