ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক বৈঠকে প্রায় দুই কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং। তিনি বলেছেন, একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সফল করতে সিঙ্গাপুর এই অর্থ ব্যয় করছে; আর এটাই অামাদের আগ্রহের জায়গা।
Advertisement
তবে মোট অর্থের অর্ধেক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় হবে উল্লেখ করে রোববার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ অর্থ ব্যয় করতে ইচ্ছুক।’
মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দুই প্রেসিডেন্ট প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক বৈঠকে বসবেন। লি সেইন লুং বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে ভূমিকা রাখতে পারে এই বৈঠক।
তিনি বলেন, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এই বৈঠকের গুরুত্ব রয়েছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় নতুন পথ তৈরিতে ফলপ্রসূ হবে এ বৈঠক।
Advertisement
আরও পড়ুন : দু’দিন আগেই সিঙ্গাপুরে পৌঁছালেন কিম জং উন
সিঙ্গাপুরের এফওয়ান পিট বিল্ডিংয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া সেন্টার পরিদর্শনে গিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন লি। এর আগে রোববার সকালের দিকে সেন্তোসা দ্বীপের পালাওয়ান কিডস সিটিতে সিঙ্গাপুর সশস্ত্র বাহিনীর ঘাঁটি ও হোম টিম কমান্ড পোস্ট পরিদর্শন করেন।
মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের ক্যাপেল্লা হোটেলে বহুল কাঙ্ক্ষিত বৈঠকে মিলিত হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উন। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে অর্থনৈতিক সহায়তার ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিরল এ বৈঠকের সংবাদ সংগ্রহ করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় আড়াই হাজার সাংবাদিক ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। বৈঠকের প্রস্তুতির ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে লি বলেন, চাপের মধ্যেও কর্মকর্তারা ভালো কাজ করেছেন। তিনি বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বৈঠক সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
Advertisement
আরও পড়ুন : আলাদা ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরে পৌঁছালেন কিমের বোন
‘এ ধরনের বৈঠক আয়োজনের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। স্থানের ব্যাপারে উভয় পক্ষকেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে হয়। এছাড়া এতে উভয় পক্ষের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাহিদার ব্যাপারও থাকে।’
‘এমন অবস্থায় উভয় পক্ষ যখন আমাদেরকে বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য অনুরোধ জানায়, তখন আমরা না করতে পারি নাই। আমাদের এটা করতে হবে...আমরা একটি ভালো কাজ করছি।’ প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং বলেন, সিঙ্গাপুরের জন্য এটি একটি ইতিবাচক দিক। এর মাধ্যমে আমাদের প্রচার হচ্ছে।
ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক এ বৈঠককে কেন্দ্র করে রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের আকাশপথে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এই সময় সিঙ্গাপুরগামী এবং সিঙ্গাপুর থেকে ছেড়ে আসা বিমানের ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটি। ‘
আরও পড়ুন : কিমকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের দু’দিন আগেই রোববার দুপুর আড়াইটায় এয়ার চায়নার একটি বিমানে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। উত্তর কোরিয়ার এ নেতা চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে তাকে স্বাগত জানান সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণ।
অন্যদিকে, রোববার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী এয়ারফোর্স-ওয়ানের একটি বিমান। পৌঁছানোর পর সোমবার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস বলছে, সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর শাংগ্রি লা হোটেলে যাবেন ট্রাম্প।
এয়ার ফোর্স ওয়ানের বিমানে ট্রাম্পের সঙ্গে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ জন কেলি ও হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স।
সূত্র : দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
এসআইএস/আরআইপি