দেশজুড়ে

আর কত গরিব হলে সরকারি ঘর?

‘হামার ভাগ্য খুব খারাপ, একখানা সরকারি ঘর পানুনা (পাইলাম না)। মাটি কাটি টিনের ঘর বানাছুক মরার শিলত তাও ফুটা হইল। সবাই কয় সরকার থাকি (থেকে) ঘর আসছে। সেই কথা শুনি চেয়ারম্যান,মেম্বারের কাছত গেনু (গেলাম) তারাও কয় সব শ্যাস (শেষ) হইছে।’ কষ্টের কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বুড়াসারডুবী গ্রামের ভিক্ষুক আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী নমিনা (৫০)।

Advertisement

জানা গেছে, সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ‘যার জমি আছে ঘর নাই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ উপ-খাতের আওতায় টিনসেড বাড়ি নির্মাণ চলছে। ‘নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় অতিদরিদ্র ও ভিক্ষুকদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করার কথা থাকলেও হাতীবান্ধা উপজেলার চিত্র ভিন্ন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, এই প্রকল্পে প্রকৃত গরিব মানুষ কোনো সুবিধাই পায়নি। যারা পেয়েছেন তারা প্রতি পরিবার ১০ হাজার করে টাকা দিয়েছেন।

তবে টাকা নিয়ে ঘর নির্মাণের বিষয়টি অস্বীকার করে ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ওই ইউনিয়নের জন্য ৩৫টি ঘর পেয়েছি। সেগুলো প্রকৃত হতদরিদ্র পরিবারগুলো পেয়েছে।

Advertisement

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ভিক্ষুক পরিবারের টিনের ঘরটি সম্প্রতি শীলা বৃষ্টিতে একেবারে ঝাজরা হয়ে গেছে। টিনের চালায় প্লাস্টিক মুড়িয়ে কোনো রকম বসবাস উপযোগী করা হয়েছে। এরমধ্যেই বাস প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আফাজ উদ্দিন (৭৫), তার স্ত্রী নমিনা (৫০), শাশুড়ি ওইচোন নেছার (৯০)। ছেলে নুরনবী বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে চলে গেছেন। আফাজ উদ্দিন ভিক্ষাবৃত্তি আর স্ত্রী নমিনা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান।

ভিক্ষুক আফাজ উদ্দিন জানান, সরকারি ঘরের জন্য সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো লাভ হয়নি।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা করেছেন। কেউ বাদ পড়লে তারা পর্যায়ক্রমে পেয়ে যাবেন।

রবিউল হাসান/এফএ/জেআইএম

Advertisement