অর্থনীতি

সাংবাদিকদের প্রশ্নে মেজাজ হারালেন মুহিত

বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে মেজাজ হারালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সাংবাদিকদের প্রশ্নকে ‘গৎবাঁধা’ উল্লেখ করে ক্ষেপে গিয়ে তিনি বললেন, যারা পরিবর্তন স্বীকার করে না, তারা এসব কথা বলেন। অবশ্য সংবাদ সম্মেলনের শেষের দিকে এসে এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশও করেছেন।

Advertisement

শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আগামী অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রস্তাবিত বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল -ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট কর কমানো, ছোট ফ্ল্যাটে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বাড়ানো ও দেশে আয় বৈষম্য বিষয়ে। জবাবে মুহিত বলেন, এই সংবাদ সম্মেলনটা একবারে ছিলি (সস্তা) বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। এমন প্রশ্ন করা হচ্ছে যা মিনিংলেস (অর্থহীন)।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশ। আপনাদের যখন জন্ম হয়েছে কিংবা জন্মের আগে, দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০ শতাংশ। বোঝেন, কোথায় ছিল বাংলাদেশ এবং এখন কোথায় এসেছে? এই কিছুদিন আগে দেশে ৩০ শতাংশ মানুষ ছিল গরিব। ৭ বছর আগে সাড়ে ৩০ শতাংশ দরিদ্র ছিল, আজ ২২ দশমিক ৪ শতাংশ। যারা চূড়ান্ত গরিব, তাদের সংখ্যা ছিল ১৮ শতাংশ। এখন ১১ শতাংশ। সেটা আপনাদের চোখে পড়ে না? তিনি বলেন, দেশে আয় বৈষম্য মোটেও বাড়েনি। যারা পরিবর্তনে বিশ্বাস করে না, তারাই এ ধরনের প্রশ্ন করেন। কোন মুখে আপনারা বলেন, এই দেশে গরিব মারার বাজেট হচ্ছে, ধনীকে তেল দেয়ার বাজেট হচ্ছে? বলেননি, কিন্তু বোঝাতে চাচ্ছেন দেশের উন্নয়ন কিছুই হয়নি।’

মুহিত আরও বলেন, ‘ইউ আর নট লুকিং ইনটু দ্য বাজেট। ইউ আর নট অ্যাট অল ক্রিটিসাইজিং দ্য বাজেট। ইউ হ্যাভ সাম সেট কোশ্চেনস, ইউ হ্যাভ কাম উইথ দ্যাট টু প্রেজেন্ট হিয়ার। (আপনারা বাজেট দেখেননি। আপনারা কোনোভাবেই এই বাজেটের সমালোচনা করতে আসেননি এখানে। আপনাদের কিছু গৎবাঁধা প্রশ্ন আছে। সেই প্রশ্ন করতেই আপনারা এখানে এসেছেন)।’

Advertisement

অবশ্য সংবাদ সম্মেলনের শেষের দিকে এসে এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এক সময় তলাবিহীন ঝুড়ি ছিলাম, এখন মধ্য আয়ের দেশে যাচ্ছি। একটু আগে যেজন্য ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম, কারণ আমার কাছে এসব প্রশ্ন অমূলক ও বাস্তবতা বিবর্জিত মনে হয়েছে। পরে তিনি সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’স্লোগানে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এমএ/এমইউএইচ/ওআর/পিআর

Advertisement