আন্তর্জাতিক

অভ্যুত্থান চেষ্টা : তুরস্কে দুই হাজার ব্যক্তিকে কারাদণ্ড

২০১৬ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার অভিপ্রায়ে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির বিচার বিভাগ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৭ জুন) বিচারমন্ত্রী আব্দুল হামিদ গুল রাষ্ট্রীয় সংবাস সংস্থা আনাদোলুকে এ কথা জানান।

Advertisement

আনাদোলুকে বিচারমন্ত্রী জানান, অভ্যুত্থানের ঘটনায় ২৮৭টি মামলার মধ্যে ১৭১টি মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এসেছে। এতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২ হাজার ১৪০ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বেকসুর খালাস পেয়েছেন ১ হাজার ৪৭৮ জন। চলতি বছরের শেষের দিকে বাকি মামলাগুলো বিচার সমাপ্ত হবে বলে জানান তিনি।

ওই অভ্যুত্থান চেষ্টার পর থেকে এ পর্যন্ত হাজারো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে তুরস্ক সরকার। আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সামরিক, বেসামরিক আমলা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বামপন্থী দলগুলোর নেতাকর্মীরা রয়েছেন। এসব বামপন্থী দলগুলোকে তুরস্ক সরকার ফেতুল্লাহর সন্ত্রাসী (ফেটো) গ্রুপ বলে আখ্যায়িত করে থাকে। তুরস্ক সরকার মনে করে, অভ্যুত্থানে এ গ্রপটির ইন্ধন রয়েছে। অভ্যুত্থানে আড়াই শ’র ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

২০১৬ সালের ১৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়। তবে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপে তা ব্যর্থ হয়ে যায়। ওই ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে কমপক্ষে ২৬০ জন নিহত এবং আরও ২ হাজার ২শ মানুষ আহত হয়। ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তুর্কি সরকার। অভ্যুত্থানের পরপরই দেড় লাখের বেশি সরকারি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং আরও প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে আটক করা হয়।

Advertisement

ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইজমিরের একটি আদালতে বিচারের মুখোমুখি হন ২৮০ সাবেক সেনা সদস্য। ১০৪ সাবেক সেনা সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরও ৫২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির এক খবরে বলা হয়েছে, ১০৪ সাবেক সেনা সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি প্রেসিডেন্টকে হত্যা চেষ্টার ষড়যন্ত্রে সহায়তার অভিযোগে ২১ জনের ২০ বছরের এবং একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়ার কারণে ৩১ জনের সাত এবং ১১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

অভ্যুত্থান পরবর্তী তুরস্ক প্রেসিডেন্টের কঠোর পদক্ষেপকে বিভিন্নভাবে সমালোচনা করছে পশ্চিমা বিশ্ব। যদিও আঙ্কারা বলে আসছে, তুরস্ককে রক্ষা করতে এ ধরনের ধরপাকড় দরকার ছিল। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এ ঘটনাকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে গুলেন অনুসারীদের সৃষ্ট ভাইরাস বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তুরস্ক সরকার বরাবরই এ অভ্যুত্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা ফেতুল্লা গুলেনকে দায়ী করে আসছে। তবে গুলেন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

সূত্র: দ্য হুররিয়াত।

এসআর/এমএস