ঋতু বৈচিত্রের বাংলাদেশে চলছে মধু মাস। আর মধু মাস মানেই বৈচিত্রময় রসালো ফলের সমারোহ। জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝিতে আম, কাঁঠাল, লিচুর মৌ মৌ গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন জনপদে। মধু মাসের বাহারি ফলে ঠাসা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজার ।
Advertisement
পাহাড়ের সুমিষ্ট আম আম্রোপালি স্থানীয় বাজারে আসতে আরও দু’সপ্তাহ দেরি হলেও ইতোমধ্যে বাজারে জায়গা করে নিয়েছে লিচু। লিচুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আনারসও বাজারে এসেছে। সঙ্গে রয়েছে কাঁঠাল ও কলা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আনারস, কলা, লিচু ও কাঁঠাল সরবরাহ করা হচ্ছে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ সমতলের বিভিন্ন জেলায়।
রমজানের শুরুতেই লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। যা হয়তো আর সপ্তাহ খানেক স্থায়ী হতে পারে। রসে ঠাসা চায়না-৩ লিচুর চাহিদা বরাবরের মতোই আকাশচুম্বী। দামের দিকটা নয় স্বাধের প্রতিই ক্রেতাদের দৃষ্টি বেশি। স্থানীয় বাজারে ১শ চায়না-৩ লিচু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪শ টাকায়। অন্যদিকে চায়না-২ বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকায়। আর দেশি জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে দেড়শ টাকা দরে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির বিস্তীর্ণ জনপদে ব্যাপকভাবে টসটসে রসালো মিষ্টি আনারসের চাষ থাকলেও দাম কম নয় এখানেও। স্থানীয় বাজারে প্রতি জোড়া আনারস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। খুচরা বিক্রেতাদের হাত ধরে এসব আনারস স্থানীয় বাজারে আসে। অবার অনেক ক্ষেত্রে পাইকারি বিক্রেতারা বাগান থেকেই আনারস কিনে থাকেন।
Advertisement
চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপযুক্ত আবহাওয়া ও উর্বর মাটির কারণে খাগড়াছড়িতে বরাবরের মতোই কাঁঠাল, আনারস ও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। তবে বৈশাখী ঝড় আর শিলাবৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে এসব মৌসুমী ফলে। পাশাপাশি এ জনপদে কলার চাষ হয় বছর জুড়েই। সবমিলিয়ে ফলে ফলে ভরে উঠেছে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজার।
খাগড়াছড়ির সবচেয়ে বড় মৌসুমী ফলের বাজর হিসেবে পরিচিত গুইমারা বাজার ঘুরে দেখা যায়, আনারস, কলা ও কাঁঠালে সয়লাব। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই কোথাও। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বাজারটি। পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি ও মহালছড়িসহ আশপাশের এলাকা থেকে সূর্য্য ওঠার পর থেকেই বাজারে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন ফল। একদিন আগেই বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এখানে এসেছেন। পাইকারদের হাত ধরে ট্রাকভর্তি আনারস, কলা ও কাঁঠাল যাচ্ছে সমতলের বিভিন্ন জেলায়।
খাগড়াছড়িতে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা গেলে স্থানীয় চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফলের ভালো দাম পেতো বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতনমহল।
তাদের মতে, হিমাগার না থাকায় এখানে উৎপাদিত ফল-ফলাদি সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই কমমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে তাদের।
Advertisement
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এফএ/আরআইপি