ভ্রমণ

ভালোবাসায় উজ্জ্বল তাজমহল

দিল্লিতে তখনো ভোর হয়নি। বাস নামিয়ে দিলে কাশ্মিরি গেইটে। ট্যাক্সিতে পাহাড়গঞ্জ। একটু খুঁজতেই দারুণ একটি হোটেল পেলাম। ক্লান্ত শরীর নিয়ে একটু ঘুম। সকালের নাস্তা সেরে আগ্রা যাওয়ার প্রস্তুতি। গতিমান এক্সপ্রেসের টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। কাছেই দিল্লি মেইন স্টেশন থাকলেও নিজামুদ্দীন রেলওয়ে স্টেশন থেকে পরের দিনের গতিমান এক্সপ্রেসের টিকিট সংগ্রহ করে নিলাম। উদ্দেশ্য তাজমহল দেখবো।

Advertisement

নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই পৌঁছে গেলাম নিজামুদ্দীন রেলওয়ে স্টেশনে। ট্রেন ছাড়তে তখনো ৩ ঘণ্টা বাকি।

গতিমান এক্সপ্রেসগতিমান এক্সপ্রেস নাকি ভারতের সবচেয়ে দ্রুতগামি ট্রেন। এটি শুধু নিজামুদ্দীন রেলওয়ে স্টেশন থেকে আগ্রা স্টেশনে যাওয়া-আসা করে। দিল্লি থেকে আগ্রার ২০০ কিলোমিটার পথ যেতে এই ট্রেনে সময় লাগে মাত্র ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। শুক্রবার বাদে প্রতিদিনই এই ট্রেন নিজামুদ্দীন স্টেশন থেকে ছাড়ে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। আগ্রায় পৌঁছায় সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে। আর আগ্রা থেকে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে দিল্লির নিজামুদ্দীন স্টেশনে পৌঁছায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।

আরও পড়ুন- দিল্লি মানালি শিমলা আগ্রা কলকাতা ভ্রমণের পরিকল্পনা

Advertisement

ট্রেন ছুঁটে চলছে আগ্রার উদ্দেশে। একটু পরেই সকালের নাস্তা চলে এলো। নাস্তা শেষ করতে না করতেই পৌঁছে গেলাম আগ্রা স্টেশনে। সারাদিনের জন্য ট্যাক্সি ভাড়া করে নিলাম। শুরুতেই গন্তব্য তাজমহল।

ভালোবাসার তাজমহলপাসপোর্ট দেখিয়ে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে টিকিট সংগ্রহ করে নিলাম। নিরাপত্তা বেষ্টনি অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকতেই দূরে চোখে পড়লো তাজমহল। সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। কারণ এই তাজমহল দেখতেই এখানে আসা। আমরাও কিছু ছবি তুলে নিলাম। তাজমহলের চারদিকে রয়েছে কয়েকটি পুরনো ভবন। এগুলো নাকি সে সময় বিশ্রামাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

মধ্য দুপুরের রোদে চিকচিক করছিল পুরো তাজমহল। ভেতরে জুতো পায়ে প্রবেশ নিষেধ। এজন্য টিকিটের সাথে আমাদের দেওয়া হয়েছিল বিশেষ কাপড়ের জুতো। তা পরে নিয়ে ঢুকে গেলাম তাজমহলের একদম ভেতরে।

আরও পড়ুন- ঘুরে দেখা দিল্লি : কুতুব মিনার থেকে লাল কেল্লা

Advertisement

সম্রাট শাহজাহান ও মমতাজের সমাধি একদম তাজমহলের মাঝেই। ভেতরে বেশি সময় থাকার সুযোগ নেই। বাইরে এসেই দেখা মিললো তাজমহলের অপরূপ সৌন্দর্য। পাথর ও পাথর কেটে তৈরি করা টাইলস দিয়ে কিভাবে সেই সময়ে এমন একটি স্থাপনা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, সে চিন্তায় কেটে গেল অনেকটা সময়।

তাজমহলে পাশ দিয়েই বয়ে গেছে যমুনা নদী। শুকনো মৌসুম হওয়ায় নদীতে হাঁটু পানি। নদীর ওপারে আগ্রা ফোর্ট। তাজমহল দেখা শেষ করে চলে গেলাম আগ্রা ফোর্টে।

ট্রেনের সময় হয়ে যাওয়ায় তাড়াতাড়ি ফিরতে হলো স্টেশনে। গতিমান এক্সপ্রেসে করে ফিরে এলাম দিল্লি শহরে। রাতের ফ্লাইটেই যাবো কলকাতা।

এএ/এসইউ/জেআইএম