জাতীয়

‘এতো লোক, টিকিট দেব কীভাবে’

সকাল সাড়ে ৮টা, ট্রেনের ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা। তিল ধারণের জায়গা নেই। স্টেশনের কাউন্টারের সামনে থেকে টিকিট প্রত্যাশীদের লাইন এঁকেবেঁকে চলে গেছে রাস্তার কাছাকাছি।

Advertisement

টিকিটের এ দীর্ঘ লাইন দেখে অবাক স্টেশনের ম্যানেজার। বলে ওঠেন, ‘আমাদের তো একটা সীমাবদ্ধতা আছে। সবাই ট্রেনের টিকিট চাইলে কীভাবে হবে? এতো লোক টিকিট দেব কীভাবে?

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে ঈদের আগ্রিম টিকিটের দীর্ঘ অপেক্ষার দেখে এমন মন্তব্য করেন স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, ‘আজ (৫ জুন) দেয়া হচ্ছে ১৪ জুনের টিকিট। সকাল ৮টা থেকে মোট ২৬টি কাউন্টারে এ টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। আজ মোট ২৭ হাজার ৪৬১টি টিকিট বিক্রি হবে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ টিকিট এসএমএস বা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হবে। ১০ শতাংশ সংরক্ষিত টিকিট। বাকি ৬৫ শতাংশ স্টেশন থেকে দেয়া হবে। কিন্তু আজকের টিকিটের জন্য গতকাল (সোমবার) থেকেই মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। সবাইকে কি টিকিট দেয়া সম্ভব? অনেকে এখনও এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন, তারা কি আর টিকিট পাবেন?’

Advertisement

এদিকে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে বাড়ি যেতে অগ্রিম টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন হাজার হাজার মানুষ। কাউন্টারের সামনে থেকে শুরু করে মানুষের এই লাইন গিয়ে ঠেকেছে প্রধান সড়কের কাছাকাছি। টিকিট প্রত্যাশীদের ভীড়ে স্টেশন এলাকা যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

রাকিব হোসেন নামে একজন দিনাজপুরের টিকিটের জন্য ভোর রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সকাল সাড়ে ৮টা তখনও কাঙ্খিত টিকিট পাননি তিনি।

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর যাব। ১৪ জুনের টিকিটের জন্য সেহেরি খেয়ে ভোর ৪ টার সময় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখনও টিকিট পাইনি, অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।’

এভাবেই রাকিবের মত হাজার হাজার যাত্রী কমলাপুরে অপেক্ষায় আছেন অগ্রিম টিকিটের জন্য। আর যারা দীর্ঘ অপেক্ষার পর কাঙ্খিত টিকিট পাচ্ছেন তাদের মুখে স্বস্তির হাসি।

Advertisement

তাদেরই একজন আশরাফুল।জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘ঈদে গ্রামের বাড়ি রাজশাহী যাব। গতকাল রাত ১২ টায় টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। সকাল ৯ টার পর টিকিট পেয়েছি। অপেক্ষার পরও যে টিকিট পেয়েছি এটাই আনন্দ। কারণ ঈদে বাড়ি যেতে পারব, বাবা মার সঙ্গে ঈদ করতে পারব।

এদিকে আজ বিক্রি হচ্ছে আগামী ১৪ জুনের ট্রেনের টিকিট। সকাল ৮টা থেকে মোট ২৬টি কাউন্টারে একযোগে শুরু হয়েছে টিকিট বিক্রি। এর মধ্যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত কাউন্টার আছে দুইটি। আগামীকাল ৬ জুন দেয়া হবে ১৫ জুনের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট।

টিকিট কাউন্টার থেকে জানানো হয়, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। ঈদ উপলক্ষে বিক্রিত টিকিট ফেরতযোগ্য নয়। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা ট্রেনে কোনো আসনবিহীন টিকিট ইস্যু করা হবে না। অন্যান্য ট্রেনের ক্ষেত্রে শুধু যাত্রীদের অনুরোধে যাত্রার দিন আসন বিহীন টিকিট ইস্যু করা হবে।

এদিকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

এসআই/এএস/এমএমজেড/জেআইএম