দেশজুড়ে

সংবাদ দেখেই জ্যোতির বাবাকে ডেকে নিলেন ফরিদপুরের ডিসি

ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে দুঃসহ জীবন-যাপন করা সেই সাড়ে তিন বছরের শিশু জ্যোতির পাশে দাঁড়ালেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া। তার সহায়তায় রোববার বিকেলে জ্যোতিকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

Advertisement

গত ৩০ মে জাগো নিউজে ‘ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে জ্যোতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে পড়লে তিনি পরিবারটির খোঁজখবর নিয়ে জ্যোতির বাবা জাহিদ মিয়াকে ডেকে আনেন তার কার্যালয়ে।

রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া জ্যোতির বাবা জাহিদ মিয়ার হাতে জ্যোতির উন্নত চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন এবং জ্যোতিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রফেসর ডা.শাহিনুল ইসলামের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন তিনি।

শিশু জ্যোতির বাবা জাহিদ মিয়া বলেন, বর্তমানে জ্যোতি খুব অসুস্থ। তার প্রস্রাব পায়খানা হচ্ছে অল্প পরিমাণ। মুখ দিয়ে বমির সঙ্গে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। শনিবার বিকেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জ্যোতিকে এনে ভর্তি করি। জ্যোতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুরের চিকিৎসকরা ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন।

Advertisement

তিনি বলেন, রোববার জেলা প্রশাসক ডেকে নিয়ে জ্যোতিকে ঢাকায় নেয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা করেন এবং ঢাকা মেডিকেলের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। বিকেলের মধ্যেই জ্যোতিকে নিয়ে রওনা দিব।

জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, শিশু জ্যোতির বিষয়ে জাগো নিউজে প্রকাশিত সংবাদটি দেখে ওর বাবা জাহিদ মিয়াকে ডেকে আনি। খোঁজখবর নিয়ে ওর দুরবস্থার কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে আমার পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা করেছি। এছাড়া জ্যোতির উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞর সঙ্গে কথা বলে জ্যোতিকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কাউলিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ মিয়ার কন্যা জ্যোতি। জন্মের সাত দিনের মাথায় তার পেটে সমস্যার কারণে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ সি পালের কাছে আনা হয়। ডা. এসি পাল তখন শিশুটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অপারেশন করার কথা বলেন। দুইদিন পর নয় দিন বয়সে শিশু জ্যোতিকে অপারেশন করেন ডা. এসি পাল। এরপর আরও দুইবার অপারেশন করেন তিনি। এরপরও জ্যোতি সুস্থ হয়ে না উঠায় ডা. এসি পাল ঢাকার শিশু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন জ্যোতিকে। সেখানকার চিকিৎসক ডা. আমিনুর রশিদ ও ডা.আজিজ জ্যোতিকে দেখে বলেন ফরিদপুরে যে তিন বার অপারেশন করা হয়েছে সেটা সঠিক হয়নি। পুনরায় তিনবার অপারেশন করতে হবে জ্যোতিকে। এই কথা শুনে দরিদ্র বাবা জাহিদ মিয়া জ্যোতিকে নিয়ে বাড়ি চলে আসেন।

এমএএস/এমএস

Advertisement