সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের জেল থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরছেন আরও ৩০ নিপীড়িত নারী কর্মী। এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে আজ রাতে তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। চলতি মাস জুড়ে দুই শতাধিক নির্যাতিত নারী ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহায়তায় দেশে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার কর্মকর্তা আল-আমীন নয়ন।
Advertisement
তিনি জানান, রোববার রাত ৮টায় এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল অান্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের অবতরণের কথা রয়েছে। তারা সবাই অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পে আশ্রয় নেন।
রিয়াদের বাংলাদেশি দূতাবাস এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অয়েজ অার্নার্স কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক সহায়তায় এই নারী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে ফিরে আসা নারী শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন রূপগঞ্জের সাথী, ভোলার জোসনা, কেরানীগঞ্জের মল্লিকা, বরগুনার শাহনাজ, কক্সবাজারের শাকিলা, দিনাজপুরের মনজুরা বেগম, ফরিদপুরের মাজেদা বেগম, নওগার শম্পা প্রমুখ।
Advertisement
ফিরে আসা এসব নির্যাতিত নারীরা জানান, সৌদি আরবে প্রতিনিয়ত তাদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। বিভিন্ন বাসায় আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক দেয়ার পাশাপাশি রড গরম করে ছ্যাঁকা পর্যন্ত দেয়া হয়। ঠিকভাবে খাবার ও পানি দিত না।
এদের একজন দিনাজপুরের মনজুরা বেগম বলেন, ‘আমার পাসপোর্টসহ ইজ্জত-সম্মান সব দিয়ে এসেছি সৌদিতে। মালিকের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে প্রথমে পালিয়ে বাংলাদেশের দূতাবাসে যাই। এরপর দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস দিয়ে দেশে আসি।’
উল্লেখ্য, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, ২০১৭ সালে অভিবাসী নারীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯২৫ জন, যা মোট অভিবাসন সংখ্যার ১৩ শতাংশ। ১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত অভিবাসন প্রত্যাশী নারী শ্রমিককে একা অভিবাসনে যেতে বাধা দেয়া হলেও পরবর্তীতে ২০০৩ এবং ২০০৬ সালে কিছুটা শিথিল করা হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নারী শ্রমিকের অভিবাসন হার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মোট অভিবাসনের ১৯ শতাংশে।
আরএম/এসআর/জেআইএম
Advertisement