দেশজুড়ে

দীঘিনালা ডাকঘরে ভাঙন আতঙ্ক

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডাকঘরে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে কর্মরত কর্মকতা-কর্মচারীদের। অফিস থেকে না ফেরা পর্যন্ত মনে এক অজানা আতঙ্ক ভর করে থাকে তাদের। সেবা গ্রহণকারীদেরও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ডাকঘরে প্রবেশ করতে হয়। সব মিলিয়ে একটি ভুতুরে পরিবেশ বিরাজ করছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডাকঘরে।

Advertisement

দীঘিনালা ডাকঘরে পোস্টাল অপারেটর কাজলা চাকমা জানান, ডিজিটাল যুগে এক জরাজীর্ণ ভবনেই চলছে দীঘিনালা ডাকঘরের কার্যক্রম। ভবনের বাইরের বা ভেতরের দৃশ্য দেখলে মনে হবে এ যেন এক ধরনের মৃত্যুকুপ। ভবনটির ছবি তুলে ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের বরাবর পাঠানোর হলেও নতুন ভবন নির্মাণ কিংবা বর্তমান ভবন সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা না করলে যেকোন সময় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকঘরের বাইরে দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙে গেছে এবং চারপাশে দেয়ালে শ্যাওলা জমেছে। ভবনের রঙ খসে দেয়ালের আস্তর উঠে গেছে। ভবনের ভেতরের বেশির ভাগ জানালা দেয়াল থেকে খুলে গেছে। যেটুকু আছে তাও ভেঙে গেছে। ভবনটিতে পোস্ট মাস্টারের আবাসন ব্যবস্থা থাকলেও তা বসবাস অনুপযোগী হয়ে গেছে। জীর্ণশীর্ণ ভবনটির ভেতরে বৃক্ষের শেকড় যা দেয়ালকে আকড়ে ধরেছে। ভবনের ভেতরে নতুন করে বৃক্ষের শাখা-প্রশাখার বিস্তার ঘটছে।

ডাকঘরে কর্মকর্তরা জানান, দীঘিনালা ডাকঘরের বেহাল দশার কথা রাঙ্গামাটির আঞ্চলিক শাখায় জানানো হলেও ভবন নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

Advertisement

ডাকঘরের দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরও করুন। পুরো ঘরে এক ধরনের ভুতুরে পরিবেশ বিরাজ করছে। সিঁড়ি দিয়েও উঠানামা করতে ভয় পাবে যে কেউ। ভবনের বড় বড় অংশে দেয়ালের পলেস্তার খসে গেছে।

দীঘিনারা ডাকঘরে কর্মরত রুইপা মারমা বলেন, ১৪ বছর ধরে এ খানে কাজ করছি। আগে পুরাতন ডাকঘরে ছিলাম বর্তমানে এ ভবনে আছি। কিন্তু মনে হয় যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়বে।

দীঘিনালা ডাকঘরে পোস্টাল অপারেটর কাজলা চাকমা বলেন, ‘প্রশাসনিক সকল চিঠি ডাক বিভাগের মাধ্যমে আদান-প্রদান হয়ে থাকে। এ ছাড়াও সারা বছরই বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার খাতা ডাকঘরের মাধ্যমেই বোর্ডে পাঠানো হয়। ঝুঁকিপুর্ণ ভবনটিতে আমরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছি। ভবনের বেহাল দশার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে নতুন ডাকঘর ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও তা এখনও হয়নি।’

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন নির্মিত হলে আবেদনের প্রেক্ষিতে ডাক বিভাগের কার্যক্রমের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে।

Advertisement

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/আরএ/জেআইএম