দেশজুড়ে

আগুনও থামে না, ক্ষতিপূরণও মেলে না

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার ভোর ৪টার দিকে আমদানিকৃত পণ্যবোঝাই একটি ভারতীয় ট্রাকে আগুন লাগলে সেটা অন্যান্য ট্রাকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে ভারতীয় পণ্য বোঝাই ১০-১২টি ট্রাক ও বেশ কিছু মোটরসাইকেল পুড়ে গেছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

Advertisement

আগুনের খবর পেয়ে বন্দর পরিচালক আমিনুল ইসলাম, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল, বন্দরের ডেপুটি পরিচালক রেজাউল করিম, পোর্ট থানা পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

স্থানীয় বন্দর ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের প্রধান এ স্থলবন্দরে এরআগেও ৮ বার আগুন লেগেছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ২৩নং শেডে আগুন লেগে শত কোটি টাকার পণ্য পুড়ে যায়। বন্দরের নিজস্ব ফায়ার সার্ভিসে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নেই বলে সবসময়ই তা ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় ভারতীয় ট্রাক চালকরা ট্রাক রেখে ভারতে ফিরে যান। ট্রাকচালকরা ঘটনাস্থলে থাকলে কিছু ট্রাক আগুনের হাত থেকে রক্ষা করা যেত।

এই বন্দরে বিভিন্ন সময় ঘটা অগ্নিকাণ্ডে প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। যার কোনো ক্ষতিপূরণ আজও পাননি আমদানিকারকরা। বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরে রক্ষিত মালামালের কোনো বীমাও করেন না রহস্যজনক কারণে। বিভিন্ন সময় সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও সেটা ধামাচাপা পড়ে যায়।

Advertisement

বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, রোববার সাহরি খাওয়ার পরপরই হঠাৎ বন্দরের ট্রাক টার্মিনালের ভেতরে ভারতীয় একটি পণ্য বোঝাই ট্রাকে আগুন ধরে যায়। পরে তা মুহূর্তে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি বন্দর কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বলেন, বন্দরের অব্যবস্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ। জায়গা বৃদ্ধি না করে ট্রাক টার্মিনালের মধ্যে বিভিন্ন মালামাল রাখায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এছাড়াও বন্দরে যে কয়েকবার আগুন লেগেছে তা রোববার ভোরেই হয়েছে। এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।

ফায়ার সার্ভিস বেনাপোলের স্টেশন ইনচার্জ তৌফিকুর রহমান জানান, রোববার ভোর ৪টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস বেনাপোল স্টেশনের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে আরও ২টি ইউনিট যোগ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি। আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা সম্ভব নয়। আমদানিকৃত অনেক পণ্য এখানে রাখা ছিল। কাগজপত্র না দেখে এ বিষয়ে বলা যাবে না। বিষয়টি বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Advertisement

জামাল হোসেন/এফএ/জেআইএম