দেশজুড়ে

কৌশল পাল্টিয়ে এখনও সক্রিয় রূপগঞ্জের মাদক কারবারিরা

সর্বনাশা মাদক বাণিজ্যে অস্বাভাবিক মুনাফার লোভে ও গ্রেফতার এড়াতে কৌশল পাল্টিয়ে নিজেদের পরিবারের নারী সদস্যের হাতে অর্পণ করেছে মাদক সাম্রাজ্য পরিচালনা ভার। এমনই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়ন এলাকায়।

Advertisement

পুলিশ জানায়, রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পিতলগঞ্জেই রয়েছে ২৫টি মাদক বিক্রেতা পরিবার। এদের মধ্যে পুলিশের ধরপাকড়, জেল জরিমানার শিকার হলেও আদালতের কাছ থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় মাদক বাণিজ্য চালায়। তবে কৌশল পাল্টানোর কারণে অনেকটা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে এসব মাদক কারবারিরা।

সূত্র জানায়, পিতলগঞ্জ গ্রামের খালেক মিস্ত্রির ছেলে লতিফ মিয়া, আজুর ছেলে পনির মিয়া, আবুল হোসেনের ছেলে লোকমান, সাজু মিয়ার ছেলে হারুন, হারিন্দা এলাকার মৃত ওয়াজদ্দিনের ছেলে দোলনের শেল্টারে তার ভাই সুমন, ভক্তবাড়ির ছায়েদ আলীর ছেলে সিরাজ, ছায়েদ আলীর ছেলে সিরাজ, ভক্তবাড়ির মোস্তফা, রবিউল মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া, গুতিয়াবোর বেলায়েত, আলমাছ, আওলাদ,গোয়ালাপাড়ার ইয়াবা সফি, টেকনোয়াদ্দার কিলার রফি, ছনির সোহেল, সুহিন, বাড়িয়ার টেকের বকুল, ব্রাহ্মণখালীর সবুর মিয়াসহ শতাধিক মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার এড়াতে কৌশল পাল্টিয়ে চালাচ্ছে তাদের মাদক বাণিজ্য। শুধুমাত্র সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডেই ১৫ হাজার বাসিন্দার মাঝে প্রায় ৫ শতাধিক মাদকসেবী রয়েছে। এদের মাঝে ব্যবসায়ী রয়েছে অর্ধশতাধিক। তবে এদের বেশিরভাগ মাদক কারবারিরাই এখন নদী পথে বালু ও শীতলক্ষ্যার বালিবাহী ট্রলার ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মাদকের স্বর্গ রাজ্য হিসেবে পরিচিত পূর্বাচলের আবাসন প্রকল্পে নির্জন এলাকা থাকায় মাদক সরবরাহের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে এ এলাকা ব্যবহার করছে তারা। প্রায় প্রতিটি এলাকায় সিন্ডিকেট করে মাদক কারবারিরা তাদের কৌশল পাল্টিয়ে এখনও সক্রিয় রয়েছে। তাই সঙ্কিত রয়েছে স্থানীয় নিরীহ বাসিন্দারা।

সূত্র আরও জানায়, মাদক কারবারিতে নারীদের হাতেই রয়েছে পরিচালনা চাবি। পিতলগঞ্জের গণি মিস্ত্রির বোন আমেলা, নুরুল ইসলামের স্ত্রী পরিবানু, পনিরের স্ত্রী সোনিয়া, হারুনের স্ত্রী ফরিদা একই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার হারুন মিয়াও এখন এ মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা থাকায় ও জামিনে থাকার পরও সম্প্রতি দেশ ব্যাপি প্রশাসনের নজরদারিতে সতর্ক হয়ে ওঠেছেন। তবে তারা দিনের বেলায় এলাকায় থাকলেও রাতে বাড়িতে ঘুমান না বলে জানা যায়। আর নারীদের দিয়ে রমজান মাসেও মাদক কারবার চালাচ্ছে। এসব বিষয় থানা পুলিশ জানলেও নারীদের চেক করা ও নারীদের ধরতে রয়েছে নানা অযুহাত।

Advertisement

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু হোসেন ভুইয়া রানু বলেন, মাদক কারবারিরা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুনরায় একই পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। তাতে যুব সমাজ হুমকীর মুখে আছে।

রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, মাদক কারবারিরা সমাজ ধ্বংসের মূল কারণ। তাই সমাজ থেকে মাদক নির্মূলে প্রশাসনের ভূমিকাকে সাধুবাদ জানাই।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুণিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির বলেন, নারী পুলিশের তেমন সংকট নেই। তবে মাদক কারবারিরা যে কৌশলই অবলম্বন করুক। তাদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।

মীর আব্দুল আলীম/আরএ/জেআইএম

Advertisement