খেলাধুলা

নামমাত্র পারিশ্রমিকে বিশ্বকাপের জার্সি বানাচ্ছেন বাংলাদেশিরা

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ফুটবল বিশ্বকাপের একবিংশতম আসর। সারা বিশ্ব জুড়ে চলছে বিশ্বকাপের উন্মাদনা। এই উন্মাদনার বড় ১টি অংশ জুড়ে থাকে নিজ নিজ পছন্দের দেশের জার্সি সংগ্রহ করা এবং তা পরে খেলা দেখা। বাংলাদেশের জন্য গর্বের একটি বিষয় এই বিশ্বকাপের জার্সি।

Advertisement

কেননা ফুটবল বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ফুটবল দল অংশ নিতে না পারলেও, বিশ্বকাপের জার্সিতে ঠিকই লেখা থাকে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সিংহভাগ জার্সিই বাংলাদেশ থেকে বানিয়ে নেয় দেশগুলোর জার্সি স্পন্সররা।

এবার ইংলিশ সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব জার্সি স্পন্সরদের করা নির্মম অমানবিকতার কথা। ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ডেইলি টেলিগ্রাফের মতে বাংলাদেশ থেকে নামমাত্র পারিশ্রমিকে ইংল্যান্ডের জার্সি বানিয়ে নিচ্ছে জনপ্রিয় খেলাধুলার সরঞ্জামাদি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘নাইকি’।

ইংলিশ ফুটবল দলের জার্সি স্পন্সর হিসেবে তাদের বিশ্বকাপ জার্সি যোগান দেয়ার দায়িত্বে রয়েছে নাইকি। নাইকি এসব জার্সি বানিয়ে নেয় বাংলাদেশের সাভার অঞ্চলের গার্মেন্টস কারখানা থেকে। পরে জাতীয় দলকে তাদের চাহিদামতো জার্সি সরবরাহ করে বাকি জার্সিগুলো প্রতিটি ১৬০ ইউরো মূল্যে বাজারে বিক্রি করে নাইকি।

Advertisement

কিন্তু সেই তুলনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রতি ঘণ্টায় মাত্র ২১ পেন্স করে পারিশ্রমিক দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয় ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে। পুরো মাসের পারিশ্রমিক হিসেব করলে দাঁড়ায় মাত্র ৪৭ ইউরো। অথচ একটি জার্সিই বিক্রি করা হয় ১৬০ ইউরো মূল্যে।

নাইকির এই কাজ প্রকাশ করে নিজেদের প্রতিবেদনে ডেইলি টেলিগ্রাফ লিখে, ‘নাইকির বিশাল লাভ করার সহজ উপায় হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে জার্সি বানিয়ে সেগুলো চড়া মূল্যে বাজারে বিক্রি করা। এসব জার্সি বানানো শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দিয়ে তাদের মৌলিক চাহিদাই পূরণ করা সম্ভব হয় না। পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বচ্ছল জীবনযাপন তো অনেক দূরের ব্যাপার।’

অবশ্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের এতো অল্প পারিশ্রমিকের পেছনে গার্মেন্টস মালিক কর্তৃপক্ষের দায়ও কম নয়। তবু এই নামমাত্র পারিশ্রমিকে কাজ করেই বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করে যান এসব শ্রমিকেরা। নাইকির মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশি গার্মেন্টস মালিকদের কাছে নিজেদের পরিশ্রমের আরও বেশি পারিশ্রমিক দাবি করতেই পারেন বাংলাদেশি শ্রমিকেরা।

এসএএস/জেআইএম

Advertisement