অর্থনীতি

ডিএসইর বাজার মূলধন নেই সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা

টানা দরপতনে প্রতিনিয়ত দেশের শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি কমছে বাজার মূলধনের পরিমাণ। শেষ সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চারদিন দরপতন হয়েছে। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

Advertisement

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা।

এদিকে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস মূল্যসূচক কিছুটা বাড়লেও পরের চার কার্যদিবস টানা দরপতন হয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান সূচকের পাশাপাশি সবকটি সূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮৫ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ২৫৫ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ তিন সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইএক্স কমেছে সাড়ে তিন’শ পয়েন্টের ওপরে।

Advertisement

অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ কমেছে ৩৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ১০২ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ২১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি কমে ১৭ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৪১ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১২ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১০২টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ২১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দাম।

মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসিইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৫৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

Advertisement

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৩৫৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৯২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৮২ দশমিক ৮৮ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এছাড়া বাকি ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের এবং দশমিক ৮৩ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইন্ট্রিকো রিফুয়েলিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৩ কোটি ৪ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ১১ শতাংশ। ৮০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বার্জার পেইন্ট।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস, লিগাসি ফুটওয়্যার, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মুন্নু সিরামিক।

এমএএস/এমআরএম/এমএস