আইন-আদালত

মনে হয় লজ্জায় কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকি : হাইকোর্ট

‘দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থা। রাষ্ট্রীয় সংস্থার কাজ নিয়ে আমরা আর কত কথা বলব। এখন মনে হয় লজ্জায় কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকি। কেন এত কথা বললাম।’

Advertisement

বুধবার (৩০ মে) বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়তির দুর্নীতি মামলার শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পরে মামলার বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার (৩১ মে) দিন ধার্য করেন আদালত।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও সৈয়দ মামুন মাহবুব। আসামি পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৫৬ মামলার তদন্ত আড়াই বছরেরও বেশি সময়ে শেষ না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তাদের ডেকে ক্ষোভ, উষ্মা, হতাশা প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

Advertisement

শুনানিতে আদালত বলেন, এরকম একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা দিয়ে যদি কাজ না হয়, তাহলে তো এটি থেকে কোনো লাভ নেই। এ নিয়ে কত কথা বললাম! এখন লজ্জায় মনে হয় কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকি। কেন এত কথা বলেছি। আদেশ দিয়ে তো কোনো লাভ হয়নি। মনে হয় উলুবনে মুক্তা ছড়ানো হয়েছে।

এ সময় আদালত দুদককে জিজ্ঞাসা করেন- অন্যান্য মামলার বড় আসামিদের ধরেন না কেন?

বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়তির দুর্নীতির মামলার আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করতে না পারার কারণ ব্যাখ্যার জন্য ৫৬ মামলার আট তদন্ত কর্মকর্তা ও দুই তদারক কর্মকর্তা সব নথিসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গত ২৩ মে হাইকোর্টের এ দ্বৈত বেঞ্চ তাদের তলব করেন।

ওই আদেশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, বেসিক ব্যাংকের অন্তত ৫৬ মামলার মধ্যে কয়েকটি মামলার আসামি ফজলুস সোবহান, শিপার আহমেদসহ কয়েকজনের জামিন শুনানিতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবালসহ সব মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বুধবার হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আইন অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে এসব মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় আড়াই বছর পার হলেও তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এর কারণ ব্যাখ্যার জন্য তাদেরকে তলব করা হয়।

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ২০১৫ সালের ২১-২৩ সেপ্টেম্বর ১৫৬ জনকে আসামি করে মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় ৫৬টি মামলা করে দুদক।

১৫৬ আসামির মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে ৪৮টি, ডিএমডি ফজলুস সোবহানকে ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থকে ২৩টি এবং ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করে দুদক। পরবর্তীতে আরও মামলা হয়।

এফএইচ/এএইচ/আরআইপি