দেশজুড়ে

মন ভরানো রসালো পাহাড়ের লিচু

রসে টইটুম্বর সুস্বাদু ফলের নাম লিচু। পাহাড়ে এ বছর প্রচুর পরিমাণে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। রাঙ্গামাটির এ লিচু বর্তমানে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, কাপ্তাইসহ বিভিন্ন উপজেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিনই রাঙ্গামাটি শহরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও লঞ্চে করে লিচু আনা হচ্ছে। যা রাঙ্গামাটির চাহিদা মিটিয়ে ট্রাকে করে জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

Advertisement

নানিয়ারচরের লিচু চাষি মিজান জানান, চার একর জমিতে তিনি লিচু গাছ লাগিয়েছেন। গত ১১ বছর ধরে তিনি এই লিচু বাগান থেকে প্রতি বছরই লিচু বিক্রি করে থাকেন। এবারে ফলন ভালো হয়েছে। শুরু থেকে ভালো মুকুল এসেছিলো গাছে, তবে মাঝখানে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় কিছু মুকুল নষ্ট হলেও ভালো ফলন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ বছর বাগান পরিচর্যার জন্যে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। বাজারের মূল্য মোটামুটি ভালো তাই দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

কাপ্তাইয়ের লিচু চাষি বিরল চাকমা বলেন, গত ১৫ বছর আগে এই লিচুর বাগান করেছিলাম। যা বর্তমানে আমাকে অনেক লিচু দিচ্ছে। প্রতিবছর আমি এই লিচু বিক্রি করে প্রচুর লাভবান হই। এবার আশা করি ভগবানের আর্শিবাদে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা আয় করতে পারবো।

বরকলের লিচু চাষি প্রভা রাণি চাকমা বলেন, আমার স্বামী এই লিচু বাগান করেছিলো, তিনি গত হওয়ার পর আমি এই লিচু বাগান পরিচর্যা করে আসছি। রাঙ্গামাটিতে হিমাগার না থাকায় ফল সংরক্ষণ করতে অসুবিধে হচ্ছে তবে বাজার মূল্য মোটামুটি স্বাভাবিক হওয়ায় এবং জেলার বাইরে প্রচুর পরিমাণে চাহিদা থাকায় লিচু অতিদ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমান চাকমা জানান, রাঙ্গামাটিতে প্রায় ১৭ শত ৪২ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৭.৬৫ টন করে প্রায় ১৩ শত মেট্রিক টন লিচু উৎপন্ন হবে। রাঙ্গামাটিতে দুই ধরনের লিচু চাষ করা হয় চায়না-২ এবং চায়না-৩। তবে চায়না-২ ফলন কম হয় বলে প্রায় চাষি চায়না-৩ লিচুর বাগান করে থাকে।

তিনি জানান, রাঙ্গামাটির মাটি লিচু চাষের জন্যে উর্বর। তাই যে সকল বাগানে লিচুর চাষ করা হয়েছে সবগুলোতে ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে চায়না-২ প্রতি একশতে ৩০০-৩৫০ টাকা এবং চায়না-৩ প্রতি একশতে ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে লিচুর আকার অনুসারে বাজারে আরও কম দামের লিচুও পাওয়া যাচ্ছে। এ কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, বাজারের মূল্য স্বাভাবিক থাকায় আশা করা যায় চাষিরা তাদের ন্যায্যমূল্য পাবে।

আরএ/আরআইপি

Advertisement