স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অবিলম্বে সকল লাইসেন্সবিহীন ও মানহীন ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। শনিবার সচিবালয়ে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম সংক্রান্ত এক সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি একথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য রক্ত পরিসঞ্চালন প্রয়োজন। কিন্তু অনুমতি না নিয়ে, মান বজায় না রেখে রক্ত পরিসঞ্চালন মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। লাইসেন্স ছাড়া এ জাতীয় কার্যক্রম মেনে নেওয়া যায় না। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়া রক্ত নিয়ে ব্যবসা করছে এবং রক্ত পরিসঞ্চালনের কার্যক্রমে কোনো মান বজায় রাখছে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই জাতীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এসময় তিনি নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।দেশে ৯৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ সরকারি পর্যায়ে ২১৯টি হাসপাতালে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের ব্যবস্থা আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সরকার নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন নিশ্চিত করেছে। জনগণকে এসকল কেন্দ্রে যেয়ে রক্ত পরিসঞ্চালনে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি এ ধরনের কেন্দ্র সারা দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।মোহাম্মদ নাসিম বলেন, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিকে এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রমকে বেগবান করতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রমের সার্বিক বিষয়ে মনিটরিং কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে যাতে পেশাদার রক্তদাতার উপর নির্ভরতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায়।নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের কাজে জড়িত মানসম্মত বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি। সভায় জানানো হয়, গত দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি বিশেষ দল ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে মানহীন ও অবৈধ ১১টি ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করে দেয়। এ অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য মন্ত্রী নির্দেশ প্রদান করেন।সভায় আগামীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কাউন্সিলের চতুর্থ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঐ সভায় ব্লাড ব্যাংকের লাইসেন্স ফি কমানোসহ রেফারেন্স ল্যাবরেটরি ও ন্যাশনাল ব্লাড সেন্টার স্থাপন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব সৈয়দ মন্জুুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সনাল, বাংলাদেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ডা. এ বি এম হারুনসহ মন্ত্রণালয়, অধিদফতরের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা, রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের বিভাগীয় প্রধানগণ, র্যাব প্রতিনিধি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সন্ধানীসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচির লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. সানিউল ইসলাম সভায় দেশের রক্ত পরিসঞ্চালনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন।পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী চানখাঁরপুলে প্রস্তাবিত বার্ন ইনস্টিটিউটের জমিতে এবং মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আওতাধীন জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত এক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এতে মহাখালীতে ‘স্বাস্থ্য অঞ্চল’ এবং চানখাঁরপুলে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপনের কার্যক্রম অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এমইউ/এসএইচএস/এমআরআই
Advertisement