জাতীয়

সেজেছে আজিজ সুপার মার্কেট, বিক্রিতে হতাশা

আসছে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় উদযাপন করবে নিজেদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের দিনে নতুন পোশাক পরে নিজেদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তারা। উৎসব প্রিয় বাঙালিও এদিন পোশাকে নিজেদের ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে থাকে। তাইতো ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা বাণিজ্যের চাঙাভাব থাকে। রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোও সেজেছে নতুনভাবে। বাহারি ডিজাইনের পোশাক নিয়ে এসেছে দোকানে। সবার চেষ্টা পোশাকে নতুনত্ব নিয়ে আসা। কারণ তাতেই চাহিদা নারী-পুরুষ সবার।

Advertisement

সোমবার দুপুরে রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানে যথেষ্ট পরিমাণ সরবরাহ রেখেছে বিক্রেতারা। গ্রাহকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাহারি সব নকশার উপস্থিত রেখেছে তারা। নানা পোশাকে সেজেছে প্রতিটি দোকান। গরম উপলক্ষে জোর দেয়া হয়েছে সুতি কাপড়ের প্রতিও। তবে বিক্রেতাদের আয়োজনে বিশালতা থাকলেও সে তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা হাতেগোনা। ১১ রজমান পেরোলেও বেচাবিক্রি জমেনি বলে জানান বিক্রেতারা।

মার্কেটের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার দোকানগুলোতে দেখা যায়, বিক্রয়কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। বিক্রি কম হওয়ায় হতাশ তারা। ‘পৌরণিক’-এর বিক্রয়কর্মী মীর রাসেল বলেন, ‘এবার বেচাবিক্রি একেবারেই কম। গত বছর ১০ রোজায় যা বিক্রি হয়েছে এবার তার ২০ শতাংশ বিক্রি হয়নি। তাছাড়া হোলসেলও কমেছে অনেক।’

বেচাবিক্রি কম হওয়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা উল্লেখ করেন, প্রথমত মাসের মাঝে রোজা শুরু হওয়ায় হাতে যথেষ্ট টাকা-পয়সা অনেকের কাছে নেই। দ্বিতীয়ত কিছুদিন আগে লম্বা ছুটি পাওয়ার কারণে অনেকে বাড়ি গিয়ে অবকাশ কাটিয়ে ফিরেছেন। তাই এখন মার্কেটে আসছেন না। তৃতীয়ত বৈশাখের সময় অনেকে পছন্দের পোশাক কিনে নিয়েছেন। তবে তারা মনে করেন আগামী ১০ দিন হবে তাদের পিক আওয়ার। ১ জুনের পর স্যালারি পেলে অধিকাংশ লোকজনই কেনাকাটার জন্য মার্কেটে আসবেন।

Advertisement

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাস্টমার যা আসছে তাদের মধ্যে ছেলেদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে থ্রি-পিচ। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে থ্রি-পিচ ও ছেলেদের ফতুয়া, পাঞ্জাবি। গরম হওয়ায় সুতি কাপড়ের চাহিদা বেশি।

কথা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করা তামিম আফরিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার গরম হওয়ায় সুতি কাপড়ই আমি পছন্দের তালিকার শীর্ষে রেখেছি। আজ এক হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে একটি টপস কিনেছি। ঘুরছি, পছন্দে হলে আরও কিছু কিনবো।’

আজিজে কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজিজ মার্কেটে বরাবরই ইউনিক কিছু পাওয়া যায়। তাই এখান থেকে কেনার চেষ্টা করি।’

পৌরণিকের বিক্রয়কর্মীরা বলেন, আমাদের কাছে থাকা সব পোশাকই নারীদের। এর মধ্যে- বড়দের জন্য শাড়ি (১,৫০০-৬,৫০০ টাকা), থ্রি-পিচ (১,৯৫০-৩,০০০টাকা), ওয়ান-পিচ, ওড়না, টপস। আর বাচ্চাদের জন্য আছে থ্রি-পিচ (১,০৫০-২,০০০ টাকা), ওয়ান-পিচ। এ দোকানের সবই তাদের নিজস্ব প্রোডাক্ট। আছে সুতি ও জর্জেটের পোশাকও।

Advertisement

গাঁও গেরাম’- এর ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জানান, তাদের কাছেও থাকা সব পোশাক নারীদের। এর মধ্যে বড়দের জন্য রয়েছে- থ্রি-পিচ, ওয়ান-পিচ, ওড়না, টপস, প্লেন শাড়ি, হাফ সিল্ক শাড়ি, হাতের কাজ করা শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। আর কন্যা শিশুদের জন্য- থ্রি-পিচ, ওয়ান-পিচ, স্কার্ট রয়েছে। এ ছাড়া ছোট ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি ও ফতুয়া।

ইজি’র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ড. মাহবুব হোসেন জানান, তাদের কালেকশনের মধ্যে রয়েছে- টি-শার্ট (৩৯০-৯৯০ টাকা), জিন্স প্যান্ট, শার্ট, ফতুয়া, ইত্যাদি।

আবরু’র রিপ্রেজেন্টেটিভ নোমান রহমান বলেন, আমাদের এখানে দেশীয় প্রোডাক্টের সঙ্গে সঙ্গে কিছু ইন্ডিয়ান পণ্যও রয়েছে। তবে তা অল্প। কারণ এর চাহিদা কম। দামও বেশি। তার ওপর কাপড় মোটা। তিনি বলেন, আমাদের সবই বড়দের পাঞ্জাবি (১,০৫০-১,৬৫০ টাকা)।

বকুলস’র ম্যানেজার সাথী আক্তার বলেন, আমাদের কাছে রয়েছে বুটিকস, জটজেড, সুতি কাপড়ের থ্রি-পিচ, ওয়ান-পিচ।

স্টাইল’র ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, তাদরে কাছে পাঞ্জাবি (১১৫০-১৯৫০ টাকা) ও টি-শার্ট (২৯০-৬৫০ টাকা) রয়েছে।

এমএইচ/জেডএ/বিএ