বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে ভারত সরকার এখনো আশাবাদী এবং এই চুক্তিকে সমর্থন করে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তবে তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন সরকারের সম্মতি ছাড়া এ চুক্তি সম্ভব নয়।
Advertisement
সোমবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুষমা স্বরাজ এসব কথা বলেন।
‘সব পক্ষের অনুমোদন ছাড়া তিস্তার ব্যাপারে কোনো চুক্তিই সম্ভব নয়। দুই দেশ বাংলাদেশ এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতিতে এই সমস্যার সমাধান হবে না।’
তিনি বলেন, এই চুক্তির ব্যাপারে প্রধান অংশীদার হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং এ ব্যাপারে আমরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জির সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি।
Advertisement
২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যান। ওই সময় তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তির বিকল্প হিসেবে রাজ্যের অন্য তিনটি নদী থেকে বাংলাদেশকে পানি দেয়ার একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী; তবে তিস্তা থেকে নয়। ‘আমাদের সরকার চার বছর পূর্ণ করেছে এবং এখনো এক বছর বাকি আছে। সুতরাং তিস্তা চুক্তিতে না পৌঁছাতে পারাকে এ সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে বলা যাবে না।’ তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন না হওয়াটা মোদির সরকারের জন্য ব্যর্থতা কি না; এমন এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ২৫ ও ২৬ মে শেখ হাসিনার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি ও মমতা ব্যানার্জির বৈঠকের সফলতার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে সুষমা স্বরাজ বলেন, গত বছরের এপ্রিলে তিস্তার বিকল্প হিসেবে পানি সরবরাহে নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেছেন, তিস্তার পানি ভাগাভাগি করা হলে পশ্চিমবঙ্গ ভোগান্তির শিকার হবে।
পানিবিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা মমতার বিকল্প পানি সরবরাহের প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করছেন। তারা এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। সুষমা বলেন, রাজ্য হওয়ায় ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গকে এড়িয়ে তিস্তার পানি বণ্টন করতে পারে না।
ভারতের এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির একটা ভূমিকা রয়েছে; যা কেন্দ্রীয় সরকার উপেক্ষা করতে পারে না।’
Advertisement
২০১১ সালে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আপত্তি তোলেন মমতা ব্যনার্জি। ওই সময় ঢাকায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে এসে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
সূত্র : ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া।
এসআইএস/এমএস