ক্যাম্পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির এক যুগ

কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশ ঘিরে গড়ে উঠা মধ্য-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২০০৬ সালের ২৮ মে দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ১৩ বছরে পা দিয়েছে প্রাকৃতিক নৈসর্গে ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠার এক বছর পর ২০০৭ সালের ২৮ মে ৭টি বিভাগে ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক নিয়ে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কার্যক্রম। বর্তমানে সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠে ৬টি অনুষদের অধীনে ১৯টি বিভাগে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠার একযুগে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের ৬টি ব্যাচ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশে,পাশাপাশি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে সোমাবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য ড. ইমরান কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।

প্রতিষ্ঠার ১২ বছরে নানা অপূর্ণতায় আটকে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অগ্রযাত্রা। দীর্ঘ এই একযুগে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৪টি আবাসিক হল, ৩টি একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও এ সবকে ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রকল্পে ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০১৩ এর ফেব্রুয়ারিতে উন্নয়ন প্রকল্প-১ম পর্যায়ে ৭০ একর ভূমি জন্য আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে গিয়ে আবেদনটি বাতিল হয়ে যায়। তবে বর্তমানে পুনরায় ভূমি অধিগ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানা যায়। পর্যাপ্ত ভূমি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে একাডেমিক ভবন,শ্রেণিকক্ষ,স্বতন্ত্র গ্রন্থাগারের সংকট, রয়েছে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অডিটোরিয়ামের অভাব।

Advertisement

ভূমি সংকটের পাশাপাশি অর্থ বরাদ্দের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র গবেষণা বের না হওয়া, বিভিন্ন বিভাগে সেশন জটের প্রভাব, নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে না উঠা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভঙ্গুর চিকিৎসাসেবা, বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা অনিয়মের সমস্যায় জর্জরিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠার একযুগ পার হলেও এখনও নির্মিত হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘একটি বেশ বড়সর উন্নয়ন প্রকল্প সরকারের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রস্তাব করার কাজ চলছে। এখানে সব অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি আগামী দুই বছরের মধ্যে দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শেষ হবে।’

এত অপূর্ণতার মাঝেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য শিক্ষার্থীদের মেধাবলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার একযুগে বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্যতম অর্জন হলো এ বছর বিভিন্ন বিভাগে ৯ জন শিক্ষার্থীর প্রধানমন্ত্রী কাছ থেকে স্বর্ণ পদক পাওয়া। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রেখে চলেছে তাদের মেধার স্মারক।

রিদওয়ানুল ইসলাম/আরএ/এমএস

Advertisement