রমজানকে আল্লাহ তাআলার তার নিজের মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। হাদিসে কুদসিতে প্রিয়নবির বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রোজা আমার জন্য রাখা হয়; আর আমিই রোজা প্রতিদান দেব।’
Advertisement
রমজান মাসে মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক সুসংবাদ রয়েছে। তন্মধ্যে সেরা সুসংবাদ হলো- এ মাসে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়; জাহান্নামের দরজাগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হয় আর কুমন্ত্রণাদানকারী বিতাড়িত শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়।
এ সবের কারণ হলো বান্দা যেন মহান রবের ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেদের উজাড় করে দিতে পারে। আর এ ইবাদতের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত দান করতে পারেন। এ সবই মহান আল্লাহ তাআলার অপার হেকমত।
এ মাসে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য অসংখ্য ঘোষণা রয়েছে। এ সবের মধ্যে সেরা ঘোষণা হলো ক্ষমাপ্রাপ্তি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাত দ্বিপ্রহরের পর প্রথম আসমানে এসে বান্দাদেরকে ডেকে ডেকে জানতে চান, কে আছ ক্ষমাপ্রার্থী, আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর; আমি ক্ষমা করে দেব। কিয়ামুর রমজান তথা রমজানের রাতের ইবাদতকারীদের জন্য নিজেদেরকে ক্ষমা করিয়ে নেয়ার এ হলো এক সুবর্ণ সুযোগ।
Advertisement
আরও পড়ুন > ইফতারের সময় দোয়া কবুলে প্রিয়নবির ঘোষণা
আবার এ মাসে ক্ষমা লাভের সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য নেয়ামত লাভে প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। আর এ সব প্রতিশ্রুতি লাভে দিনের বেলা রোজার পরিপূর্ণ হক আদায়ের পাশাপাশি রাতের বেশি বেশি আমল-ইবাদতে মশগুল হওয়া।
জাহান্নামের দরজা বন্ধের মাসে গোনাহমুক্ত জীবন লাভে, নিজেদের জন্য স্থায়ীভাবে জাহান্নামের দরজা বন্ধ রাখতে বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করাও জরুরি।
কুরআন নাজিলের মাসে অন্যতম ইবাদত হলো আল্লাহর কুরআন তেলাওয়াত করা। যে তেলাওয়াতে বান্দা আল্লাহর সঙ্গে কথা বলে থাকে। কুরআন তার ইবাদতকারীর জন্য কেয়ামতের ময়দানে নাজাতের সুপারিশ করবে। তাই রমজানে কোনো মুমিন মুসলমানের জন্য কুরআন তেলাওয়াতের মতো ইবাদতে সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।
Advertisement
আরও পড়ুন > যথাসময়ে ইফতার করার ফজিলত
রমজানের প্রতিটি ভালো কাজই দুনিয়া ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণ লাভের পাথেয় হিসেবে কাজ করবে। প্রিয়নবির এ ঘোষণাটি মনে রেখে রহমত বরকত কল্যাণ ও নাজাত লাভে প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্রিয়নবি বলেছেন, ‘এ মাসে আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং বিতাড়িত শয়তানকে বেড়ি পরিয়ে দেয়া হয়। এ মাসে রয়েছে আল্লাহর (ইবাদতের) জন্য এমন একটি রাত; যে রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। আর যে এ মাসের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে, সে আল্লাহর তাআলার সব কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে।’ (নাসাঈ)
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত নাজাত লাভ ও যাবতীয় কল্যাণের প্রতিশ্রুতি লাভে রমজানের রোজা পালন ও তার যথাযথ হক আদায় করা।
আরও পড়ুন > কী খেলে সাহরি খাওয়া হয়?
কেননা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে প্রচুর মেহনত করতেন। রজব ও শাবান মাস থেকে রমজানের ইবাদতের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে ইবাদত-বন্দেগি পালনে ইতেকাফে নিজেকে বন্দী রেখেছেন। কোমর বেঁধে ইবাদতে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। পরিবার পরিজনদেরকেও ইবাদতে নিয়োজিত করেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকেও প্রিয়নবির পথে মতে বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার, কুরআন তেলাওয়াত, শেষ সময়ে সাহরি ও প্রথম সময়ে ইফতার গ্রহণ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দান-সাদকা, কিয়ামুর রমজান, তারাবিহ ও তাহাজ্জুদ ও ইতেকাফে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নায় ঘোষিত যাবতীয় প্রতিশ্রুতি ও নেয়ামত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর