টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অনৈতিক কাজ দেখে তা প্রকাশ করার হুমকি দেয়ায় কিশোর আশিক দেওয়ানকে খুন করা হয় বলে গ্রেফতারকৃত তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আশিক মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে। গ্রেফতাররা হলেন, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আবুডাঙ্গা গ্রামের মজিবর মোল্লার ছেলে সুজন মোল্লা (১৯), মির্জাপুরের আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের মো. শরিফ (১৯) ও আলমগীর হোসেন (১৫)।পুলিশ সূত্র জানান, গত ১৪ জুলাই চিতেশ্বরী গ্রামের একটি কাঠ বাগানের ডোবা থেকে আশিকের মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে তার বাবা আলী হোসেন গত ১৬ জুলাই অজ্ঞাত নামাদের আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ গত বুধবার ভোরে হত্যাকেণ্ডে জড়িত সন্দেহে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আবুডাঙ্গা গ্রামের মজিবর মোল্লার ছেলে সুজন মোল্লাকে (১৯) বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। বুধবার সুজন মোল্লাকে টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জন কান্তি দাসের আদালতে নেয়া হলে সেখানে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত মির্জাপুরের আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের মো. শরিফ (১৯) ও আলমগীর হোসেনকে (১৫) নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হলে সেখানে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জন কান্তি দাসের আদালতে আলমগীর হোসেন ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমানের আদালতে মো. শরীফ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানিন্দি দেন।এদিকে তাদের গ্রেফতারের পর সুজন পুলিশকে জানান, তিনি আশিকের চাচা ট্রাক চালক খাজা দেওয়ানের সহকারি হিসেবে কাজ করতেন। কয়েকদিন আগে সুজন তার সহযোগী শরিফ, আলমগীর ও শুকুর মিয়াকে নিয়ে চিতেশ্বরীর কাঠ বাগানে এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। যা শুকুর মিয়া মোবাইল ফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। ওই ভিডিও চিত্রটি দেখে তা চাচার কাছে প্রকাশ করবে বলে শুকুরকে আশিক হুমকি দেয়। এ কারণেই তারা চারজনে আশিককে খুন করেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়। পরে তারা গত ১৩ জুলাই সন্ধার পর জরুরি কথা আছে বলে আশিককে ডেকে চিতেশ্বরী কাঠবাগান এলাকায় নিয়ে হাত পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ কাঠ বাগানের পাশে ডোবায় ফেলে রাখেন। পরদিন পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. জাকির হোসেন জাগো নিউজকে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সুজনকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসে। পরে তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অপর এক সহযোগী শুকুরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।এমজেড/আরআইপি
Advertisement